Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৭ই নভেম্বর সকাল ১০টায় জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে সভায় সার্জন ডাঃ মোঃ মাহফুজার রহমান সরকার, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মোঃ বাকাহীদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর) মোঃ ফজলুল করিম, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভুরাম পাল, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী(চঃ দাঃ) কে.বি.এম সাদ্দাম হোসেন, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান, পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদা ফেরদৌসী, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজম, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরে সফুরা ফেরদৌস ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাঃ মজিনুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ ও বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, রাজবাড়ী জেলায় সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের অগ্রগতি বা এই সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারী বিভাগের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও যে সকল বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো নিরসনের জন্যই প্রতি মাসে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা হয়ে থাকে। সরকারের উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে এই কমিটির সভায় যে সমস্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় সেগুলো বাস্তবায়নে আমাদের সকলকে আরো উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, রাজবাড়ীর শিশুদের জন্য একটি শিশু পার্ক খুবই দরকার। সেই বিষয়টি বিবেচনা করে রাজবাড়ী পৌরসভার যে শিশুপার্কটি বন্ধ রয়েছে সেটি যাতে চালু করা যায় সেই লক্ষ্যে রাজবাড়ী পৌরসভার সাথে সমন্বয় করে জেলা প্রশাসন এর সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর মধ্যে শিশুদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। গত বছর সরকার জেলার বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতের থেকে জনসাধারণকে রক্ষা জন্য তালগাছ লাগানোর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। আগামীতেও এই কার্যক্রমসহ জেলায় পর্যাপ্ত বৃক্ষরোপন হয় সেই লক্ষ্যে এই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর তথ্য মতে রাজবাড়ী জেলাসহ পাঁচটি উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিসহ যে সকল সমস্যা রয়েছে, সেগুলো যাতে নিরসন করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একত্রিত হয়ে সমস্যা সমাধান করতে হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা থেকে ধাওয়াপাড়া ও মুরগীর ফার্ম থেকে পাংশার শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত সড়কের কাজ আরো দ্রুত গতিতে করতে হবে। এছাড়া মহাসড়কের যে পরিমান জায়গা দরকার সেই পরিমান জায়গা বাদ দিয়ে জেলার বিদ্যুৎ বিভাগকে মাহসড়কের পাশে তাদের বিদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে সড়ক সম্প্রসারণ করলেও বিদ্যুতের খুঁটি পুনরায় আবার সরাতে না হয়।
তিনি বলেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের বক্তব্য অনুযায়ী রাজবাড়ীর শহরের ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রত্যয় প্রতিবন্ধী স্কুলটি সর্বদিকে অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। যাতে এই স্কুটির ভালো ভাবে চালানো যায় এবং আরো উন্নয়ন সাধন করা যায় সেই লক্ষ্যে আমরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠাবো। যার মাধ্যমে এই স্কুলটির উন্নয়নসহ যাবতীয় সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব হবে। আর প্রতিবন্ধী ও অর্টিজমে আক্রান্তদের সরকার যে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে এবং তাদের সাথে কি ধরনের আচরণ করতে হবে সে সম্পর্কে যেদিক নির্দেশনা প্রদান করছে সকলকে সে বিষয়গুলো দিকে আরো সচেতন হয়ে আমেদের কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ও অর্টিজমে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে কে কি কাজ করল সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসককে পাঠাবেন। জেলা প্রশাসক সেই প্রতিবেদন বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। এছাড়াও প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন ২০১৩ অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিবন্ধীকে তাদের অধিকার প্রদান করেত হবে। রাজবাড়ী সাব-রেজিস্টার অফিসে বিভিন্ন সমস্যার কারণে সাব-রেজিস্টার ছিলেন না। বর্তমানে সে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি রবি, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজবাড়ীতে সাব-রেজিস্টার জমি সংক্রান্ত তার কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়াও সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের বাসভবন, জেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রম, গোয়ালন্দ মোড়ের ভাস্কর্যের অবশিষ্ট কাজ সমাপ্তকরণ, গণপূর্ত বিভাগের সার্কিট হাউজ, জেলা-উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি, এলজিইডি’র বিভিন্ন রাস্তা প্রশস্থকরণ, সরকারী পুকুর খনন ও সেতু নির্মাণ, সড়ক বিভাগের রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের অগ্রগতি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধের ২য় প্রকল্প, দৌলতদিয়া ঘাট ও অন্যান্য স্থানের নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাজবাড়ী পৌরসভার ২য় পানি শোধনাগার প্লান্টের কাজের অগ্রগতিসহ জেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হয়।