Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

আড়কান্দি স্কুলের ৩টি বড় মেহগনি গাছ মনগড়া কমিটি করে স্বল্প দামে নিলামে বিক্রির অভিযোগ

॥এম মনিরুজ্জামান/কাজী তানভীর মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যলয়ের অর্ধশত বয়সী ৩টি বিশাল আকারের মেহগনি গাছ মনগড়া কমিটির করে স্বল্প দামে নিলাম করার অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয়ে সম্প্রতি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জায়গার মধ্যে থাকা তিনটি তাজা মেহগনি গাছ কেটে মাত্র ১৯হাজার ২শত টাকায় বালিয়াকান্দির মধুপুর এলাকার আব্দুল জলিলের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ৩টি গাছ কবে কোথায় কারা নিলাম করেছে এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা সদস্য কেউ কিছুই জানেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, আড়কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি সুজিত সাহা ও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ভারতী মৈত্র এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও গাছ কাটা কমিটির সদস্য সচিব মোঃ আশরাফুল হক গতকাল শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যালয়ের তিনটি তাজা মেহগনি গাছ ইউএনও তার মনগড়া কমিটি দিয়ে নামমাত্র মূল্যে মাত্র ১৯হাজার ২শ’টাকায় বিক্রি করে স্কুলের ন্যায্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করেছেন। সেই সাথে তিনি সরকারী খাতের রাজস্ব থেকে সরকারকেও বঞ্চিত করেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরিপত্র দেখিয়ে জানান, সরকারী স্কুলের কোন গাছ, ভবন বা অন্য কোন সম্পদ নিলামে বিক্রির জন্য সরকারের ২০১০ সালের পরিপত্রে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সভাপতি, উপজেলা শিক্ষা অফিসার সদস্য সচিব, উপজেলা প্রকৌশলী সদস্য, স্কুলের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে সদস্য করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট নিলাম কমিটি গঠন করতে হবে। কিন্তু বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আড়কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা বন বিভাগের প্রতিনিধি ও উপজেলা প্রকৌশলীকে দিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তার মনগড়া কমিটির করে প্রায় এক লক্ষাধিক টাকার তিনটি গাছ কম দামে নিলামে বিক্রি করে স্কুল ও সরকারের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার, আড়কান্দি সরকারী প্রাথমিক স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক জানান, স্কুলের ওই তিনটি গাছ বিক্রির জন্য তারা ম্যানেজিং কমিটির সভা করেছেন এবং গত ৩১/১০/২০১৯ তারিখে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরের লিখিত আবেদন করেছেন।
কিন্তু হঠাৎ গত ১৩ই নভেম্বর কিছু লোক করাত নিয়ে এসে ওই গাছ কাটায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অবাক হয়ে বাঁধা দিলেও তাতে কোন ফল হয়নি।
এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান জানান, আড়কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত তিনটি মেহগুনি গাছ স্কুলের উন্নয়ন মূলক কাজের স্বার্থে ভুমি মন্ত্রনালয়ের স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শাঃ-১২(মাঃপ্রাঃ)-০৭/২০০১-১৯০(৫০০), তাং-২০/০৫/২০০২ইং সূত্র বলে বন কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী ও সহকারী কমিশনার ভূমি এর উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে নিলাম ডাক দেওয়ার জন্য গাছের মাপ গ্রহন পূর্বক প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়েছে। সে অনুযায়ী গত ০৩/১১/১৯ তারিখে প্রকাশ্যে নিলাম ডাক দেওয়া হয়। ৫জন ডাককারীর মধ্যে মোঃ আব্দুল জলিল সাং-মধূপুর এর ডাক সর্ব্বোচ্চ হওয়ায় দরটি গ্রহনের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়। উক্ত সিদ্বান্তের প্রেক্ষিতে দেয়া দরের সমুদয় অর্থ ১৯,২০০ টাকা ও ১৫% ভ্যাট বাবদ ২৮৮০ টাকা জমা প্রদান করায় তিন কর্ম দিবসের মধ্যে কাঠ ও জ্বালানি বুঝিয়ে নেয়ার জন্য আদেশ প্রদান করা হয়েছে। সুতারাং এ নিলাম ডাকে কোন অনিয়ম হয় নাই। আর কমিটিও ভূমি মন্ত্রনালয়ের স্মারক মূলে করা হয়েছে। ওই কমিটি আমার মনগড়া না। আর এই বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি।