Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় !

বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। গত কয়েক বছরে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় বাংলাদেশ চালের ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এখনো দেশে পর্যাপ্ত চাল মজুদ আছে। বাম্পার ফলনের কারণে বিদেশ থেকে চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে চালের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। সঙ্গে ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি যোগ করায় মোট আমদানি শুল্ক দাঁড়ায় ২৮ শতাংশ। এতে লাভ হয়েছে এই যে গত দেড় বছর চাল আমদানি অনেকটাই বন্ধ ছিল। এর মধ্যে আমদানি শুল্ক কমানোর জন্য ব্যবসায়ীরা দাবি জানালেও সরকার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে গিয়ে স্থিতিশীল হয়। কিন্তু হাওরাঞ্চলে সাম্প্রতিক অকাল বন্যায় ফসলহানির পর চালের বাজার আবার অস্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের মজুদপ্রবণতা বৃদ্ধির পাশাপাশি একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী চালের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে চালের দাম কমার কথা। কিন্তু হাওরে বন্যা ও অতিবৃষ্টিকে পুঁজি করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমনিতে এপ্রিলের শেষের দিক থেকেই বাজারে নতুন চাল আসা শুরু হয়। কিন্তু এবার প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফসল উঠতে বিলম্ব হয়েছে। বাজারের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতেই চাল আমদানিতে আরোপিত শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।
দেশে প্রধান খাদ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় চাল। কাজেই চালের বাজার অস্থিতিশীল হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সর্বত্র। দেশে যে চাল মজুদ আছে, তাতে কোনো সংকট হওয়ার কথা নয়। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে, হাওরের ফসলহানির কোনো প্রভাব বাজারে পড়বে না। তবে এটা ঠিক যে বাজারে মূল্যস্ফীতি দেখা দিলে সবচেয়ে বিপদে পড়বে নিম্ন আয়ের মানুষ। এই ঘাটতি মোকাবেলায় সরকারকে সম্ভাব্য সব কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। মজুদ চাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় খোলাবাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার উদ্যোগী হলে চালের বাজার স্থিতিশীল থাকবে। ব্যবসায়ীদের কারসাজি কোনো কাজে আসবে না।