Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

২১শে এপ্রিল গোয়ালন্দের গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবীতে মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন

॥এম.এইচ আক্কাস॥ ২১শে এপ্রিলকে গোয়ালন্দ প্রতিরোধ ও গণহত্যা দিবস হিসেবে সরকারী স্বীকৃতির দাবীতে গতকাল ২১শে এপ্রিল মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাক বাহিনী পদ্মা পাড়ের গোয়ালন্দ ঘাট আক্রমন করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ভেঙে ব্যাপক ধ্বংসলীলা ও বালিয়াডাঙা গ্রামে গণহত্যা চালায়।
ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় এই মানববন্ধন কর্মসূচী। মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডর মোঃ শাজাহন শেখ, মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম শফি, আব্দুল আজিজ, আফজাল হোসেন, আকবর হোসেনসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানেরা।
এছাড়া গণহত্যার শিকার পরিবারগুলোর উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার সকালে বালিয়া ডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ১৯৭১ সালের ২১শে এপ্রিল নিহতদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভা হতে নিহত জিন্দার আলী মৃধার ছেলে সাবেক উজানচর ইউপি চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা তাদেরকে শহীদ পরিবারের মর্যাদা ও বালিয়াডাঙা গ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী জানান।
জানাযায়, কাকডাকা ভোরে আরিচা ঘাট থেকে একটি গানবোট ও একটি কে-টাইপ ফেরী করে হানাদার বাহিনী এসে নামে তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমার উজানচর ইউনিয়নের কামারডাঙ্গী এলাকায়। সেখানে স্থানীয় জনতার সহায়তায় ইপিআর, আনসার ও মুক্তিবাহিনীর একটি দল হালকা অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। কিন্তু পাক বাহিনীর ভারী অস্ত্রের মুখে অল্প সময়ের মধ্যেই মুক্তি বাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় শত্রু বাহিনীর বুলেটে শহীদ হন আনসার কমান্ডার ফকীর মহিউদ্দিন।
এরপর পাকবাহিনী পাশ্ববর্তী বালিয়াডাঙ্গা গ্রাম চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে ব্যাপক গণহত্যাযজ্ঞ চালায়। নিরীহ গ্রামবাসীর ঘর-বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সেখানে হানাদারের বুলেটে শহীদ হন বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের স্বাধীনতাকামী জিন্দার আলী মৃধা, নায়েব আলী বেপারী, মতিয়ার বেগম, জয়নদ্দিন ফকির, কদর আলী মোল্লা, হামেদ আলী শেখ, কানাই শেখ, ফুলবুরু বেগম, মোলায়েম সরদার, বুরুজান বিবি, কবি তোফাজ্জল হোসেন, আমজাদ হোসেন, মাধব বৈরাগী, আহাম্মদ আলী মন্ডল, খোদেজা বেগম, করিম মোল্লা, আমোদ আলী শেখ, কুরান শেখ, মোকসেদ আলী শেখ, নিশিকান্ত রায়, মাছেম শেখ, ধলাবুরু বেগম, আলেয়া খাতুন, বাহেজ পাগলাসহ নাম না জানা আরো অনেকে। সেই থেকে এই দিনটিকে গোয়ালন্দ প্রতিরোধ দিবস হিসেবে বিবেচনা করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারন মানুষ।