Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

জাতীয় সংসদের লোগোর অপব্যবহার করায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার নামে জিডি

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত ভিজিটিং কার্ডে জাতীয় সংসদের লোগো ব্যবহার, সংসদীয় ককাশের চেয়ারম্যানের সচিব পরিচয় ব্যবহার এবং সংসদ ভবনে প্রবেশের পাশ ফেরত না দেওয়ায় সিটি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মনিরা সুলতানা পপি’র বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে।
অভিবাসন ও উন্নয়ন বিষয়ক সংসদীয় ককাশের চেয়ারম্যান এবং নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের নির্দেশে তার ব্যক্তিগত সহকারী আশিক মল্লিক গত ১৫ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় এই জিডি করেন। সংসদ সচিবালয়ও বিষয়টি তদন্ত করছে।
আশিক মল্লিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের ছেল বর্ষণ ইসলামের রেফারেন্সে চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে মনিরা সুলতানা ককাশ চেয়ারম্যানের দপ্তরে কাজ শুরু করেন। তবে তার আচরণ সন্তোষজনক না হওয়ায় কিছুদিন পরই তাকে না আসার জন্য বলা হয়। আনুষ্ঠানিক কোন পদে নিয়োগ দেওয়া না হলেও মনিরা সুলতানা নিজ উদ্যোগে জাতীয় সংসদের লোগো ব্যবহার করে ককাশ চেয়ারম্যানের (ইসরাফিল আলম) সচিব পরিচয়ে ভিডির্টিং কার্ড বানান এবং নিজস্ব কাজে তা ব্যবহার করেন। ভিডিটিং কার্ড বানানোর ক্ষেত্রে ককাশ চেয়ারম্যানের দপ্তরের কোন অনুমতি না নেয়ার কারণে বিষয়টি ইসরাফিল আলমের আগোচরে থেকে যায়। পরবর্তীতে মনিরা ও সিটি ব্যাংকের পাল্টপাল্টি মামলার খবর গণমাধ্যমে এলে ভিজিটিং কার্ডের অপব্যবহারের বিষয়টি নজরে আসলে জিডি করা হয়েছে। সংসদের লোগো ব্যবহার করায় মহান সংসদের সম্মান ক্ষুণœ হচ্ছে উল্লেখ করে ওই কার্ডের ব্যবহার ও বিতরণ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া বারবার বলার পরও সংসদে প্রবেশের পাশ ফেরত দেননি মনিরা, যা জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সচিবালয়ের পক্ষ থেকেও বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ চত্বরের এমপি হোস্টেলের দুই নম্বর ব্লকে ককাশের কার্যক্রম পরিচালনা করেন ইসরাফিল আলম। অভিবাসীদের উন্নয়ন কাজ করে এমন বেসরকারী সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে নিয়ে অভিবাসন ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে থাকে। এমন একটি সংস্থা ওয়ারবি (ওয়েলফেয়ার অ্যাসেসিয়েশন ফর রাইটস অব বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস) ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন। ককাশ অফিসের আগে ওয়ারবিতে কাজ করতেন বলে জানিয়েছিলেন মনিরা। তবে ওয়ারবির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান মনিরা কখনোই তার সংস্থায় কাজ করেননি। তিনি মহাখালীর ডিওএইচএস’র ওয়ারবি কার্যালয়ে মনিরাকে কয়েকবার আসতে দেখেছিলেন মাত্র। এছাড়াও মনিরা চাকরীবিধি লংঘন করে রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় ৪টি প্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলেছেন। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে নিজ নামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেন মনিরা। তাতে এলএসি এন্টারপ্রাইজ নামে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ রয়েছে।
এসব বিষয়ে মনিরার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি। রাজধানীর পূর্ব নূরের চারা এলাকায় তার বাসায় যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকেও সাড়া দেননি মনিরা। যদিও তার নামে থাকা একাউন্টটি এখন ডিঅ্যাকটিভেটেড দেখা যাচ্ছে।