॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে জাল কাগজপত্র দাখিল করে জমির রেকর্ড সংশোধনের মামলা দায়ের করেছিলেন জেলার পাংশা উপজেলার মৈশালা গ্রামের মৃত রবীন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায়ের পুত্র সুশান্ত মুখোপাধ্যায়(৪৬)। কিন্তু তার শেষ রক্ষা হলো না।
জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনালের বিচারক(যুগ্ম-জেলা জজ) মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার গত ৬ই এপ্রিল মামলাটি খারিজ করে দেওয়াসহ মামলার বাদী সুশান্ত মুখোপাধ্যায়কে ২০হাজার টাকা জরিমানা এবং তার বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী মামলা দায়েরের নির্দেশ প্রদান করেছেন।
জানাগেছে, পাংশা উপজেলার মৈশালা মৌজার বি.এস ৬২২নং খতিয়ানের ১১৭ শতাংশ জমির রেকর্ড ভুল দাবী করে সুশান্ত মুখোপাধ্যায় বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ৬ই মে রাজবাড়ী ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে একই গ্রামের মৃত মোবারক উল্লাহ মিয়ার পুত্র মোঃ আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে এলএসটি-১৯৮/১৪নং মামলা দায়ের করেন। আদালত উভয় পক্ষ থেকে মোট ৭জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। গত ৬ই এপ্রিল তারিখে জনাকীর্ণ আদালতে যুক্তিতর্ক শুনানী শেষে বাদীর দাখিলীয় এস.এ ৫৭৩নং খতিয়ানের জাবেদা জাল, যোগসাজশী ও অস্তিত্ব বিহীন প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত মামলাটি খারিজের পাশাপাশি বাদী সুশান্ত মুখোপাধ্যায়কে ২০হাজার টাকা জরিমানা ও জাল কাগজপত্র সৃজন করে আদালতে দাখিলের কারণে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়েরের জন্য নির্দেশ দেন। আদালতের সেরেস্তা সহকারী খোন্দকার আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে রাজবাড়ীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করবেন মর্মে মামলার রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালত সুত্র জানায়, বাদী সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ের দাখিলকৃত এস.এ ৫৭৩ নং খতিয়ানের জাবেদা নকলটি ফরিদপুর জেলা কালেক্টরেট অফিস থেকে(ফরিদপুর ডিসি অফিসের রেকর্ড রুম) উত্তোলিত জাবেদা নকল প্রমাণের জন্য কোন বালাম তলব দেওয়া হয় নাই।
অপরদিকে বিবাদী মোঃ আব্দুল করিম পাংশা পৌর ভূমি অফিস থেকে উক্ত মৌজার বালাম বহি তলব দিয়ে তার এস.এ খতিয়ানটি সঠিক মর্মে প্রমাণ করেন। বালাম বহি পর্যবেক্ষণে বাদীর দাখিলীয় এস.এ খতিয়ানটি জাল মর্মে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হওয়ায় আদালত বাদীকে ২০হাজার টাকা জরিমানা ও তার বিরুদ্ধে জাল কাগজপত্র সৃজন করার অপরাধে রাজবাড়ীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করার নির্দেশ প্রদান করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। গত ৬ই এপ্রিল জনার্কীর্ণ আদালতে বিচারক(যুগ্ম-জেলা জজ) মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে বাদীর পক্ষে এডঃ নারায়ণ চন্দ্র দত্ত এবং বিবাদী পক্ষে এডঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন ও এডঃ স্বপন কুমার বিশ্বাস মামলাটি পরিচালনা করেন।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে একই ট্রাইব্যুনাল থেকে গত ২/১১/২০১৬ইং তারিখে এলএসটি ৯৮/২০১৪নং মামলার বিবাদী রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান সেখের পুত্র আব্দুল আজিজ সেখসহ ৬জনের বিরুদ্ধে জাল কাগজপত্র দাখিলের ঘটনায় ফৌজদারী মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলাটির বাদী একই গ্রামের(বাবুপুর) মৃত দবির উদ্দিন মোল্লার ছেলে মোঃ আব্দুল কুদ্দুস আলী মোল্লা। উক্ত মামলায় বিবাদী আব্দুল আজিজ সেখসহ ৬জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হলে তারা মহামান্য হাইকোর্ট থেকে তারা অন্তবর্তী জামিনে আছে। বর্তমানে মামলাটি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।