Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

সবাইকে আওয়ামী লীগের নৌকায় নেয়ার প্রয়োজন নেই—তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ তথ্য মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, ‘সবাইকে আওয়ামী লীগের নৌকায় নেয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদেরকে দেখতে হবে কারা দুঃসময়ে দলের সাথে ছিল, শেখ হাসিনার সাথে ছিল, তাদেরকেই নেতৃত্বে রাখতে হবে, তাদেরকেই নিয়ে পথ চলতে হবে।’
গতকাল ২৭শে আগস্ট বিকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আজ পরপর তিনবার ক্ষমতায়। তাই সবাই আওয়ামী লীগের নৌকায় উঠতে চায়। যারা অতীতে দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছে, তারাও নৌকায় উঠতে চায়। বঙ্গবন্ধুকে তারাই হত্যা করে, যারা বাংলাদেশ চায়নি। যারা একাত্তরের পরাজিত শক্তি, তাদের এদেশী এজেন্টরা এবং যে আন্তর্জাতিক শক্তি বাংলাদেশের অভ্যূদয় চায়নি, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। আজকের সময়ের দাবী হচ্ছে, জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলব ছিল তাদের বিচার করার। জাতির দাবী হচ্ছে, শতবর্ষ পরের প্রজন্মকে সত্য জানানোর স্বার্থে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে রাষ্ট্রকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এজন্য আজকে জনগণের দাবী হচ্ছে, একটি কমিশন গঠন করে তাদের বিচার করা।
বক্তব্যের শুরুতেই তথ্য মন্ত্রী বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। গভীর শ্রদ্ধা জানাই ১৫ই আগস্টের কালো রাত্রিতে নিহত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবসহ সকল শহীদদের প্রতি। গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত শহীদ জাতীয় চার নেতাকে, গভীর শ্রদ্ধা জানাই আমাদের স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের প্রতি।
‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার স্বপ্নে এঁকেছিলেন’ -উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালে তখন বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের ৪২ বছর পর পর্যন্ত তা আমরা অতিক্রম করতে পারিনি। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেটি অতিক্রম করতে পেরেছেন। বঙ্গবন্ধুকে যখন ১৯৭৫ সালে হত্যা করা হয় সেই বছর ২৬ হাজার মেট্রিক টন চাল উদ্বৃত্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু ক’দিন পরেই ঘোষণা করতেন বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠিত করে যখন সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে দেশ আবার এগিয়ে চলেছে। তিনি দেশের অগ্রগতির ঘুর্ণায়মান চাকাকে আবার ধাবমান চাকায় রূপান্তরিত করেছেন। বাংলাদেশ আজকে পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের মহাসড়কে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এটি পৃথিবীর সামনে উদাহরণ। বাংলাদেশ আজকে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সে জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, বুদ্ধিজীবীরা আপসোস করে বলে-সমস্ত সামাজিক সূচকে, অর্থনৈতিক সূচকে, মানব উন্নয়ন সূচকে আমরা পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে বহুদূর এগিয়ে গেছি।
শোক দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।