॥স্টাফ রিপোর্টার॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বর্তমানে লন্ডন আর নয়া পল্টন হচ্ছে গুজব তৈরির কারখানা। ছেলেধরা গুজব প্রথমে লন্ডন থেকে পোস্ট দেওয়া হয়। আর সেটা এখানকার কিছু বিএনপি- জামাতের নেতাকর্মী সারা দেশে ছড়িয়ে দেন’।
মন্ত্রী গতকাল ২৭শে জুলাই বিকেলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় নূরজাহান ক্লাব ময়দানে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী এ সময় গুজবের বিরুদ্ধে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, ‘এখন আবার গুজব ছড়ানো হচ্ছে বিদ্যুৎ না থাকলে ছেলেধরা আসবে। গুজব রটনাকারীদের প্রতিহত করতে হবে। কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে’।
মন্ত্রী বলেন, ‘ছেলে ধরা গুজবের হোতা লন্ডনে বসে আছেন। সেখান থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আর সেটার ডালপালা গজিয়ে ছেলে ধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। সরকার এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। হত্যা মামলার আসামী হিসেবে সবার বিচার হবে। শুধু মানুষ হত্যাকারীদের বিচার নয় গুজব যারা রটিয়েছে তারাও সমভাবে দোষী। তাদের বিরুদ্ধেও সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে’।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব খলিলুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মোহাম্মদ সেলিম ও আকতার হোসেন খাঁনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মলনের প্রথম অধিবেশনে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।
‘রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি উন্মাদের মতো আচরণ করছে’ উল্লেখ করে ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘তাদের যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী আহমেদ সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন ‘মশার কামড়ের জন্যও নাকি আওয়ামী লীগ দায়ী। এরকম হাস্যকর বক্তব্যই প্রমাণ করে তারা যে রাজনৈতিক কতটা দেউলিয়া। মাঠে না থাকলেও ঘাপটি মেরে থাকা বিএনপির ব্যাপারে লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে’।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। এই দলকে যে কেউ সমর্থন করতে পারে। কিন্তু নেতৃত্বের আসনে যে কাউকে আমরা বসাতে পারি না। নেতৃত্বের আসনে তাদেরই বসাতে হবে যারা দলের দুঃসময়ে বুকে পাথর বেঁধে দল করেছে। এখন সবাই আওয়ামী লীগের নৌকায় উঠতে চায়। কিন্তু নৌকায় আমরা সবাইকে নেব না। আমাদের নৌকা ইতিমধ্যে ভরে গেছে। যারা পিঠ বাঁচানোর জন্য নৌকায় উঠতে চান, তাদের নেয়া যাবে না’।
উদ্বোধকের বক্তব্যে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, ‘ফেইসবুকে গুজব রটানো ও অপপ্রচারকারীদের আইনের আওতায় এনে মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন দন্ড দেয়ার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন’।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, মীরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, রাঙ্গুনিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলী শাহ, রাউজানের উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার বাবুল ও রাঙ্গুনিয়ার মেয়র মোহাম্মদ শাহজাহান সিকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দলের প্রয়াত নেতাদের শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দপ্তর সম্পাদক আবু তাহের। এর আগে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অতিথিরা।