Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

যেকোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে গোয়ালন্দ ও রাজবাড়ী সদরের ছয়টি বিদ্যালয়

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ চলতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙ্গনের কারণে যেকোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে গোয়ালন্দ ও রাজবাড়ীর সদর উপজেলার ৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়গুলোর পাশ দিয়েই পদ্মা নদী প্রবাহিত হওয়ায় অনিরাপত্তা ও ঝুঁকিতে রয়েছে এ সকল বিদ্যালয়ের শিশুরা। বিদ্যালয়গুলো বিলীন হয়ে গেলে নদী ভাঙ্গন এলাকার নিঃস্ব মানুষের সহ¯্রাধিক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বে। তাদের অনেকেরই ঝরে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বলছে, নদী ভাঙ্গন এলাকার বিদ্যালয়গুলো রক্ষার ব্যাপারে তাদের বিভাগীয় কোন ব্যবস্থা নেই। তবে বিদ্যালয়গুলো স্থানান্তর করার সুযোগ রয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মালেক জানান, উপজেলার চাঁদ খানপাড়া ও বেথুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২টি নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর আগে নদী ভাঙ্গনের কারণে চর বেতকা, বেতকা, বড় সিংগা ও দৌলতদিয়া ঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থানান্তর করা হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার নৃপেন্দ্রনাথ সরকার জানান, এ উপজেলার ৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। মিজানপুর ইউনিয়নের চর সিলিমপুর ও মহাদেবপুর এবং বরাট ইউনিয়নের উরাকান্দা ও পূর্ব উড়াকান্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়তে পারে। এই বিদ্যালয়গুলো নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার জন্য রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত চর সিলিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি পদ্মা নদীর সাথে প্রায় মিশে আছে। বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে। কিন্তু এ বছর আর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে যে কোন সময় বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমান আলী ফকীর ও সহকারী শিক্ষক মুকুল হোসেন জানান, বিদ্যালয়টিতে প্রায় ১৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে- যারা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের সন্তান। বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে এই শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার সম্ভাবনাই বেশী। তাই আমরা আশা করছি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, বিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে আমি অবগত আছি। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। কারণ আমাদের বিভাগীয় পর্যায়ে বিদ্যালয় ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। তবে বিদ্যালয়গুলো স্থানান্তর করা সম্ভব। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু বিদ্যালয় স্থানান্তর করেছি।