Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

নজরদিন॥রাজবাড়ীতে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও বেওয়ারিশ কুকুর আরো বেপরোয়া !

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ ‘জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন’ দেওয়ার পর রাজবাড়ী শহরের শ্রীপুর ও গোপীনাথদিয়া এলাকার কুকুররা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
প্রায় প্রতিদিনই বেওয়ারিশ কুকুরগুলো দলবদ্ধভাবে কামড়ে হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল মেরে ফেলছে। বাদ যাচ্ছে না ছোট ছোট শিশুরাও। এতে শ্রীপুর ও গোপীনাথদিয়া এলাকায় ‘কুকুর আতংক’ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে গতকাল ৭ই জুলাই রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী সুপারিশ সম্বলিত স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়র ও জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে প্রদান করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এলাকার প্রচুর সংখ্যক বেওয়ারিশ কুকুরকে পৌরসভার পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন দেওয়ার পর কুকুরগুলো আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত দলবদ্ধভাবে কামড়ে হাঁস-মুরগী, ছাগল, গরু মেরে ফেলছে। ওই সব বেপরোয়া কুকুরের হাত থেকে স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। কুকুরের এই অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। আমরা জানি কুকুর মেরে ফেলা সমীচিন নয়, তা স্বত্ত্বেও জানমাল রক্ষার্থে কুকুরগুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
স্মারকলিপির অন্যতম উদ্যোক্তা গোপীনাথদিয়ার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, গত শুক্রবার বেওয়ারিশ কুকুরগুলো আমার পনেরো হাজার টাকা মূল্যের একটি খাসিকে কামড়ে মেরে ফেলেছে। তার আগে বেশ কয়েকটি মুরগী মেরে ফেলেছে। আমার প্রতিবেশী ফরিদ ড্রাইভারের বাড়ীর ২২টা মুরগীর বাচ্চা কামড়ে মেরে ফেলেছে। তার আগে আরো কয়েকটি বাড়ীর অনেকগুলো মুরগী, কয়েকটি ছাগল, এমনকি ১টি গরু পর্যন্ত মেরে ফেলেছে। বেশ কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থীকে কামড়েছে। এ অবস্থায় আমরা চরম আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। তাই নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়র ও জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে স্মারকলিপি দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছি। তার আগে সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে দেখা করে তাকে বিষয়টি অবহিত করে স্মারকলিপিতে লিখিত সুপারিশ নিয়েছি। যেভাবেই হোক আমরা এই বেপরোয়া বেওয়ারিশ কুকুরের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক মোঃ ইউসুফ মিয়া বলেন, শ্রীপুরের পেট্রোল পাম্পের পাশে পৌরসভা এলাকার বর্জ্য ফেলার ভাগাড়(ডাম্পিং স্টেশন) রয়েছে। ভাগারে ফেলা পঁচা-বাসী খাবার, পশুর হাড্ডি, নাড়ি-ভুড়ি খাওয়ার জন্য কুকুরগুলো সেখানে জড়ো হয়। ওই ভাগাড় কেন্দ্রীক বেওয়ারিশ কুকুরগুলোই এসব ঘটাচ্ছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পর কুকুরগুলো আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দলবদ্ধভাবে কামড়ে হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল মেরে ফেলছে। কুকুরগুলোর হাত থেকে আশে পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী ও শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।