Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

কালুখালী উপজেলা নির্বাচনে অর্পিত দায়িত্ব স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সাথে পালনের আহবান

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৬ই জুন সকাল ১০টায় জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল করিম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নূরুল ইসলাম, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে.বি.এম সাদ্দাম হোসেন, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল ইসলাম গোলদার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মজিনুর রহমান ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মোঃ বাকাহীদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শেখ মোঃ আব্দুল হান্নান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ ও বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫ম ও শেষ ধাপে আগামী ১৮ই জুন কালুখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন উপলক্ষে ইতিমধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। যেহেতু এবার মাত্র একটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেহেতু এই নির্বাচনে অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব উপজেলা পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাগণ পালন করবেন। এই দায়িত্ব যারা পালন করবেন তাদেরকে আমি সতর্ক করে দিচ্ছি যে, তারা যেন তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। যদি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ বা কর্মকান্ডের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আপনাদের সকলের জানা ইতিমধ্যে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের জন্য জেলা পুলিশের ২জন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা আমাদের নির্বাচনে সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সুতরাং আমি আশা করবো নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী সকল কর্মকর্তা অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি আরো বলেন, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর তথ্য অনুযায়ী রাজবাড়ী জেলা ও সকল উপজেলা পর্যায়ে মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ অতি অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হবে। সদর হাসপাতালকে আড়াই শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আশা করা যায়, নির্বারিত সময়ের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্বাবধানে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের জেলা কারাগার থেকে পাংশার শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত অংশের উন্নয়ন কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। সে কারণে ওই অঞ্চলের মানুষকে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আবার বাগমারা থেকে ধাওয়াপাড়া ঘাট পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজের অগ্রগতিও খুব সামান্য। ঠিকাদারদের স্বেচ্ছাচারীতার জন্য ওই রাস্তার কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না। আমি আশা করবো, জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঠিকাদারদের চাপ দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই রাস্তার কাজ সম্পন্ন করবে। রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বক্তব্য মতে, পদ্মা নদীর তীরবর্তী শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধের পাশ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বালুর বড় বড় স্তুপ করে রাখা হয়েছে-যা বাঁধ ও নদী ভাঙ্গনের জন্য মারাত্মক হুমকি। এসব বালুর স্তুপ অপসারণসহ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাড়ে ৩শত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের মধ্যে বালুর বস্তা ও ব্লক ফেলার কাজের কিছুটা অগ্রগতি হলেও ড্রেজিংয়ের কাজের অগ্রগতি হয়নি। এর কারণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৪টি ড্রেজার দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও তারা কাজ করছে ২টি ড্রেজার দিয়ে। স্বল্প সময়ের মধ্যে আরো ২টি ড্রেজার এনে দ্রুত ড্রেজিংয়ের কাজ করার জন্য তাদেরকে বলা হলো। রাজবাড়ী সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অনেক প্রচেষ্টার পর দালাল চক্রের অতিরিক্ত আদায় কিছুদিন বন্ধ করা গেলেও এখন আবার তা শুরু হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য আসছে, যার সঙ্গে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজস রয়েছে। এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে তার বদলী ও পদোন্নতির বিষয় উল্লেখ করেন।
সভায় ২ জন সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন, এলজিইডির বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, বিদ্যুতের গ্রীড সাব-স্টেশন নির্মাণের অগ্রগতি, জেলা পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পুকুর খনন ও টিউবওয়েল স্থাপন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডাক্তার না থাকা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম, প্রাথমিক শিক্ষা, মৎস্য বিভাগ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, পাসপোর্ট অফিস, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম ও বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন বিষয়সহ বিভিন্ন বিভাগের উন্নয়নমূলক কাজের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।