॥শিহাবুর রহমান॥ বালিয়াকান্দি উপজেলার শ্যামসুন্দর গ্রামে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী সুজয় কুমার লস্করের বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অজ্ঞাত ডাকাতেরা গত ৭ই জুন দিনগত গভীর রাতে ওই বাড়ীর সদস্যেদের ধারালো ও আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে ল্যাপটপ ও মোবাইলসহ প্রায় ৫লাখ টাকার স্বর্ণের গহণা লুট করে নিয়ে গেছে।
এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে গতকাল ১০ই জুন সকালে সুমন চৌধুরী(১৮) নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত সুমন শ্যামসুন্দর আড়কান্দি গ্রামের ভাড়াটে কৃষ্ণপদ চৌধুরীর ছেলে।
সুজয় কুমার লস্কর জানান, গত ৭ই জুন দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে আমার পরিবারের সদস্যরা প্রচন্ড ঘুম অনুভব করলে যে যার রুমে ঘুমিয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে একে অপরকে ডাকাডাকি করলে সবাই ঘুম থেকে উঠে এবং পরবর্তীতে তন্দ্রাছন্ন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে সবাই আবার ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ৩টার দিকে অজ্ঞাত ৩/৪জন ডাকাত বসত ঘরের বারান্দার গ্রীল ও দরজার হ্যাজবোল্ট ভেঙে আমার ভাই সনৎ কুমার লস্করের রুমে প্রবেশ করে। সনৎ কুমার হঠাৎ করে ঘুম থেকে উঠে তাদেরকে দেখতে পেয়ে চিৎকার দিতে গেলে তারা ধারালো অস্ত্র ও পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তাকে এবং পাশের রুমে থাকা তার স্ত্রী কাকলী নন্দী, আমার স্ত্রী জয়া লস্কর, ভাইয়ের মেয়ে শ্রেয়া লস্কর ও ছেলে অনিন্দ্র কুমার লস্করকে কাপড় দিয়ে হাত, চোখ ও মুখ বেধে জিম্মি করে রাখে। এরপর ডাকাতেরা বসত ঘরের উত্তরের রুম থাকা ওয়ার ড্রপের তালা ভেঙে একটি ল্যাপটপ, একটি টিএইচটিসি মোবাইল ও আলমারী ভেঙে এক ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, এক ভরি ওজনের স্বর্ণ দিয়ে বাধানো শাঁখা, ৮আনা ওজনের রুলি, ৮আনা ওজনের এক জোড়া কানের দুল, এক ভরি ওজনের ৪টি আংটি, সনৎ কুমারের ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও একটি স্যাম্পুনী মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এরপর ডাকাতেরা দক্ষিণ পাশের রুমে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে দেড় ভরি ওজনের এক জোড়া বালা, দুই ভরি ওজনের নেকলেছ, ২০আনা ওজনের বাজু ও একটি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। যার সর্বমোট বাজার মূল্য প্রায় ৫লাখ টাকা। অজ্ঞাত ডাকাতেরা রাত ৩টা থেকে প্রায় ৪টা পর্যন্ত মালামাল লুট করে বাড়ীর সবাইকে রুমের মধ্যে আটকে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে রেখে চলে যায়।
তিনি আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে দিনের বেলায় তাদের রান্না করা খাবারের মধ্যে কে বা কারা চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে। যার ফলে বাড়ীর সবাই ঘুমে অচেতন হয়ে পড়লে ডাকাতরা বাড়ীর বারান্দার গ্রীল ও দরজার হ্যাজবোল্ট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে এ ঘটনা ঘটায়।
ডাকাতদের মুখে লাল রঙের গামছা দিয়ে মুখ বাধা, পড়নে হাফ প্যান্ট ও গায়ে গেঞ্জি পড়া ছিল এবং তাদের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তারা ফরিদপুর এবং আশপাশ জেলার আঞ্চলিক ভাষায় কথাবার্তা বলেছে।
এ ঘটনায় তিনি অজ্ঞাতনামা আসামী করে গত ৯ই জুন দঃ বিঃ’র ৩২৮/৩৯২ ধারায় বালিয়াকান্দি থানায় মামলা নং-৫ দায়ের করেন।