Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

‘১৯৭১ ঃ ভেতরে বাইরে’ বইয়ে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ভুল তথ্যের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন এ কে খন্দকার

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক এবং সাবেক মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল(অবঃ) এ কে খন্দকার বীর-উত্তম নিজের লেখা ‘১৯৭১ ঃ ভেতরে বাইরে’ বইয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ভুল তথ্যের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে(ডিআরইউ) গতকাল ১লা জুন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তিনি বইয়ের বিতর্কিত অংশটুকু প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে উল্লেখিত অসত্য তথ্যের জন্য জাতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার কাছেও ক্ষমা চান।
বইয়ে উল্লেখিত ভুল তথ্যটিকে সারাজীবনে করা ভুলের মধ্যে বড় ভুল উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে এ কে খন্দকার বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৯০ বছর। আমার সমগ্র জীবনে করা কোন ভুলের মধ্যে, এটিকেই আমি একটি বড় ভুল বলে মনে করি। গোধুলী বেলায় দাঁড়িয়ে পড়া সূর্যের মতো আমি আজ বিবেকের তাড়নায় দগ্ধ হয়ে, বঙ্গবন্ধুর আত্মার কাছে এবং জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থী। আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আশা করি, প্রথমা প্রকাশনী আমার বইয়ের ৩২ প্রষ্ঠার বিতর্কিত অংশটুকু বাদ দিয়ে পূর্ণমুদ্রণ করবেন।’
তিনি বলেন, “আমার লেখা ‘১৯৭১ ঃ ভেতরে বাইরে’ বইটি ২০১৪ সালের আগস্টে প্রথমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। বইটি প্রকাশের পর সেটির ৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখিত বিশেষ অংশ ও বইয়ের আরও কিছু শব্দ ও বাক্যচয়নের প্রতি সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই লেখার জন্য দেশপ্রেমিক জনগণের অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন।”
একে খন্দকার বলেন, ‘এই তথ্যটুকু যেভাবেই আমার বইতে আসুক না কেন এই অসত্য তথ্যের দায়ভার আমার। বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণে কখনোই ‘জয় পাকিস্তান’ শব্দটি বলেননি। তাই আমি আমার বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠার উল্লেখিত বিশেষ অংশযুক্ত পুরো অনুচ্ছেদটুকু প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। একই সঙ্গে আমি জাতির কাছে ও বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার কাছে ক্ষমতা চাইছি।’
সংবাদ সম্মেলনে এ কে খন্দকার লিখিত বক্তব্য পাঠ করলেও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তার সহধর্মিনী ফরিদা খন্দকার।
সংবাদ সম্মেলনের পর ফরিদা খন্দকার বলেন, ‘বইটি প্রকাশের আগে তারা এর প্রুফ দেখেননি। যার ফলে এই ভুল তথ্যটি ছাপা হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘বইয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসত্য তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এ কে খন্দকার মানসিক ও শারিরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তিনি কথা বলারও শক্তি হারিয়ে ফেলেন। এখন কিছুটা সুস্থ হওয়ায় বিবেকের তাড়নায় তিনি এই ভুল তথ্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি উপলব্দি করেন।’
‘জয় পাকিস্তান’ শব্দটি ফেলে দিয়ে সংশোধনের জন্য বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রথমা প্রকাশনীর সহযোগিতা চেয়েছেন বলে জানান তিনি।
২০১৪ সালে প্রকাশিত এই বইটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। বইটির একটি অংশে এ কে খন্দকার লিখেন যে, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক সমাবেশে বঙ্গবন্ধু নিজের ভাষণ শেষ করে ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছিলেন।