Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৭ শতাংশ॥আজ ২কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হবে॥১৩তম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আজ শনিবার সকালে পদ্মা সেতুর ১৩তম স্প্যান খুঁটির উপর বসানো হবে। এই স্প্যানটি স্থাপন হলে সেতুর প্রায় ২কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।
পদ্মাসেতুর প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, ‘পদ্মা সেতুর ১৩তম স্প্যান ১৫ নম্বর খুঁটির সামনে এনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এটি শনিবার সকালে বসানো হবে। এই স্প্যানটি স্থাপন হলে সেতু দৃশ্যমান হবে প্রায় ২কিলোমিটার।’
তিনি জানান, ‘৩বি’ নামের স্প্যানটি মাওয়া প্রান্তে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারে বসানোর হচ্ছে। ধূসর রংয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ও ৩হাজার ১৪০টন ওজনের স্প্যানটি ৩হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন বহন করে নিয়ে আসে। এটি এখন অ্যাংকরিং হয়েছে। ভাসমান ক্র্যানবাহী জাহাজটি যথাস্থানে এ্যাংকরিং সম্পন্ন করার পরই ক্রেনে করে এটি স্থাপন করা হবে খুঁটির ওপরে।
এর আগে গত ২০শে মে বসানোর কথা থাকলেও পদ্মায় নাব্যতা সংকট আর লিফটিং ক্রেনের স্বল্পতার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। স্প্যানবহনকারী ক্রেনের রুটে পদ্মায় নাব্যতা-সংকট রয়েছে। এছাড়া স্প্যানটি ভাসমান ক্রেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য লিফটিং ক্রেন প্রয়োজন। লিফটিং ক্রেন ২৬নম্বর পিলারের পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। পাইলিং কাজ শেষ হলে ১৩তম স্প্যানটি বসানো হবে। এই স্প্যানটি বসানো হলে সেতুর ১৯৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে। জাজিরা প্রান্তে সেতুর ১৩৫০ মিটার ও মাওয়া প্রান্তের একটি স্থায়ী ও একটি অস্থায়ী স্প্যান মিলে মোট ৩০০ মিটার এবং সেতুর মাঝ বরাবর ৫-এফ স্প্যানটি অস্থায়ীভাবে বসানো শেষ হওয়ায় সেতুর মোট ১৮০০ মিটার আগেই দৃশ্যমান আছে। তবে স্প্যানগুলো ভিন্ন ভিন্ন মডিউলে বসানোর কারণে দৃশ্যমান অংশগুলো এক সারিতে নয় বরং বিচ্ছিন্নভাবে থাকবে।
এছাড়া সেতুতে রোডওয়ে স্লাব ও রেলওয়ে স্লাব বসানোর কাজ চলছে জোরেসোরে। এরই মধ্যে সেতুতে মোট ৩১২টি রেলওয়ে স্লাব ও ১৬টি রোডওয়ে স্লাব বসানো সম্পন্ন হয়েছে। আর বসানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে ২০০০টি রেলওয়ে স্লাব ও ৮০০ টি রোডওয়ে স্লাব।
জানা যায়, পদ্মা সেতুর অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ, আর নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে পদ্মাসেতু প্রকল্পের অগ্রগতি এখন ৬৭ শতাংশ। সেতুর মূল ২৬২টি পাইলের মধ্যে ২৩৬টি পাইল ড্রাইভিং শেষ হয়েছে। বাকি থাকা ২৬টি পাইল জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হবার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী।
এছাড়া মূল সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ২৫টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে আরও ছয়টি পিলারের কাজ শেষ হবে। আর বাকি ১১টি পিলারের কাজ চলমান। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ২৩টি স্প্যান ছিল। এর মধ্যে ১২টি স্প্যান পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।