॥হেলাল মাহমুদ॥ আসন্ন ঈদুল ফিতরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার ঘরে ফেরা মানুষের নিরাপদে পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট প্রস্তুত হচ্ছে।
এবার এই নৌরুটে ২০টি ফেরী ও ২৪টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে ছোট-বড় মিলে ১৬টি ফেরী দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ঈদের পূর্বে আরও ৪/৫টি ফেরী বহরে যুক্ত হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
অপরদিকে ২৪টি লঞ্চ দিয়ে বর্তমানে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। ঈদের সময়ও লঞ্চের সংখ্যা একই থাকবে, তবে প্রয়োজনে লঞ্চের ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানো হবে।
বর্তমানে এই নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তের ৬টি ফেরী ঘাটের মধ্যে ৫টি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে, ১টি ঘাট বন্ধ রাখা হয়েছে। ঈদের সময় সবগুলো ঘাটই যাতে সচল রেখে যানবাহন পারাপার করা যায় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের চাপকে সামনে রেখে ফেরী ঘাটগুলোর পন্টুন থেকে মূল রাস্তা পর্যন্ত সংযোগ সড়কগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে-যাতে নির্বিঘেœ যানবাহনগুলো ফেরীতে ওঠা-নামা করতে পারে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের সময় যাত্রীদের সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি, টয়লেট ও বাতির ব্যবস্থা করবে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ। ইতিমধ্যে তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে।
অপরদিকে ঘাট এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। ওয়াচ টাওয়ার, টহল, চেকপোস্টসহ বিভিন্ন স্তরে সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। পুলিশের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাব মোতায়েন থাকবে।
এছাড়াও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যানবাহনের বিশৃঙ্খলার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত দায়িত্ব পালন করবে।
গতকাল ২১শে মে সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পারাপার হওয়া যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম। ঘাট এলাকা কার্যত ফাঁকা। ফেরীগুলো পন্টুনে অলস দাঁড়িয়ে আছে। অনেকক্ষণ পর পর দু’চারটি যানবাহন নিয়েই ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। ঘাট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ রকম অবস্থা আরও কয়েকদিন চলবে। তারপরই শুরু হবে ঈদের চাপ।
সৌহার্দ্য পরিবহন বাসের দৌলতদিয়া ঘাটের সুপারভাইজার মনির হোসেন বলেন, এই নৌরুটের ফেরীগুলো সচল থাকলে এবং লোড-আনলোড পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে যানবাহন ও যাত্রীদের পারাপারে কোন সমস্যা হবে বলে তারা মনে করছেন।
দৌলতদিয়া ঘাটে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মাহবুব হোসেন বলেন, বর্তমানে ঘাটে কোন যানজট নেই। ঈদেও কোন সমস্যা হবে না বলে আশা করছি।
বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোঃ নূরুল আনোয়ার মিলন বলেন, এবারের ঈদে এই নৌরুটে ২৪টি লঞ্চ চলাচল করবে। নিয়ম মেনে লঞ্চ চালানোর জন্য ইতিমধ্যে লঞ্চ মালিকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। উভয় ঘাটে সার্বক্ষণিক টহল থাকবে, যাতে কোন লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে না পারে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় ফেরী চলাচল করছে। ঈদের আগে ৪/৫টি ফেরী বহরে যোগ হবে। সব ফেরীগুলো সচল থাকলে যানবাহন পারাপারে কোন সমস্যা হবে না। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি ভিন্ন। বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে ঘাটগুলো ঠিকঠাক করা হচ্ছে।
ঈদের যাত্রী পারাপারে প্রস্তুত হচ্ছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার নৌরুট
