Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

পাংশার কসবামাজাইলে সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পুলিশ সুপারের আহবান

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা মডেল থানা পুলিশের আয়োজনে গতকাল ১৮ই মে সকালে কসবামাজাইল আতাহার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে বাল্য বিবাহ-ইভটিজিং, নারী-শিশু নির্যাতন ও যৌতুক প্রতিরোধ, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস দমন, মাদকের কুফল এবং সামাজিক মূল্যবোধ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বিপিএম, পিপিএম-সেবা।
অন্যান্যের মধ্যে সহকারী পুলিশ সুপার(পাংশা সার্কেল) মোঃ লাবীব আব্দুল্লাহ, পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ আহসান উল্লাহ, কসবামাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামন খান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ শামসুদ্দিন মন্ডল, অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমস কর্মকর্তা মোজাম্মেল খান ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পরিবেশ আমাদেরকেই করে দিতে হবে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। রাজবাড়ী জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। প্রতিটি এলাকায় পাকা রাস্তার পাশে বিদ্যালয় রয়েছে, সে জন্য শিক্ষার্থীরা স্কুলমুখী হয়েছে। রাজবাড়ীতে বাল্য বিবাহের প্রবণতা অনেক কমেছে। তবে পরিবারকে আরো সচেতন হতে হবে। একটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে বিয়ে দেয়া মানে তাকে বড় ধরণের বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়া। বাল্য বিবাহের ফলে অনেক মায়ের মৃত্যু হচ্ছে, অপুষ্টিজনিত শিশুর জন্ম দিয়ে সেই শিশুটিকেও বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। তাই বাল্য বিবাহ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা বাল্য বিবাহে আবদ্ধ হলে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবে। বাংলাদেশের অনেক নারীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে, তোমরাও পারবে। তোমাদেরকে সাহসী হতে হবে, ভালো করে পড়ালেখা করতে হবে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, কসবামাজাইল ইউনিয়নের সাম্প্রতিক কিছু সন্ত্রাসী ঘটনা পুলিশকে ভাবিয়ে তুলেছে। দেশ এখন অনেক উন্নত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপনের অনেক সুযোগ রয়েছে। তাই সন্ত্রাস ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে হবে। অনেক রাজনৈতিক নেতা ভোটের সময় পেশী শক্তি ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করতে চান, কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি। উপজেলা নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে কোন পেশী শক্তির ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, পাংশায় আমার পিতা দীর্ঘ দিন থেকে চাকুরী করেছেন। তাই পাংশা আমার স্মৃতি বিজড়িত এলাকা। এই অঞ্চলের মাদক নির্মূল ও সন্ত্রাস দমনে ভূমিকা রাখা আমার কাছে ঋণ শোধরানোর মতো।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভার শেষে পুলিশ সুপার কসবামাজাইল ও মৃগী পুলিশ ফাঁড়ি পরিদর্শন করেন।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলিকে কসবামাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামন খান ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।