॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীর জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা গতকাল ১৩ই মে পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউপির শাহমীরপুর গ্রামে টিউবয়েল মিস্ত্রী আইয়ুব আলী প্রামানিক(৬০) হত্যা মামলার রায়ে নিহতের ছেলে আব্দুল আলিম প্রামানিক (৩০)কে যাবজ্জীবন ও অপর আসামী ফিরোজ প্রামানিককে ১বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেছেন।
জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে বিগত ২০১৪ সালের ৫ই অক্টোবর রাতে পুত্র আব্দুল আলিম তার পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে অন্যান্যদের সহযোগিতায় মৃতদেহ বস্তায় ভরে। এরপর সে নৌকায় করে বাড়ীর পাশে পদ্মা নদীতে বালু ভর্তি অপর বস্তার সাথে লাশের বস্তা বেঁধে লাশটি ফেলে দেয়। ঘটনার ২৬ দিন পর বিগত ২০১৪ সালের ৩১শে অক্টোবর সকালে পদ্মা নদীর শাহমীরপুর ঘাটের অদূরে নদী থেকে বস্তাবন্দী আইয়ুব আলী প্রামানিকের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই চাঁদ আলী বাদী হয়ে পাংশা থানায় অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পাংশা থানার মামলা নং-১। তাং-১/১১/২০১৪। ধারাঃ ৩০২/২০১/৩৪ দঃবিঃ।
এ মামলা দায়েরের পর ২৪ঘন্টার মধ্যে মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটনসহ ঘটনার মূল নায়ক নিহতের ছোট ছেলে আলিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ও আদালতে পিতা আইয়ুব আলী প্রামানিক হত্যার দায় স্বীকার করে আলিম।
এর আগে পিতাকে হত্যার পর নিজেকে রক্ষা করতে ঘাতক পুত্র আলিম পিতার নিখোঁজের ঘটনা উল্লেখ করে গত ২২শে অক্টোবর পাংশা থানায় জিডি নং-৬৫৬ এন্ট্রি করে।
আদালত সূত্র জানায়, গতকাল ১৩ই মে এ হত্যা মামলার রায়ে জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে নিহতের ছেলে আলিম প্রামানিককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরো ৬মাসের কারাদন্ড এবং আদালতে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ায় শাহ মিরপুর গ্রামের শাহাদত প্রামানিকের ছেলে ফিরোজ প্রামানিককে ১বছরের কারাদন্ড ও ৫হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরো ৩মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এ ছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নিহত আইয়ুব আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগমকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে আদালত। রায় ঘোষণাকালে দন্ড প্রাপ্তরা আদালতে হাজির ছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে পিপি এডঃ মোঃ উজির আলী শেখ এবং আসামী পক্ষে এডঃ তসলিম আহমেদ তপন মামলা পরিচালনা করেন।
পাংশার আইয়ুব আলী হত্যা মামলায় পুত্র আলিমের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড
