Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

গোয়ালন্দে দু’পা ও লিঙ্গ-পায়ুপথ বিহীন অদ্ভুত শিশুর জন্মের ৩ঘন্টা পরই মৃত্যু

॥এম.এইচ আক্কাছ॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গতকাল ৯ই মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দুই পা, লিঙ্গ ও পায়ুপথ বিহীন এবং লেজসদৃশ একটি অঙ্গ নিয়ে জন্মের ৩ ঘন্টা পরই এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের হাউলি কেউটিল ওলিমদ্দিন পাড়ার এক গৃহবধূর গর্ভে জন্ম নিয়েছিল শিশুটি। প্রথম সন্তানের এমন পরিণতিতে ওই দম্পতি ও স্বজনদের মধ্যে শোকের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের অনেকে কুসংস্কারমূলক নানা কথা বললেও চিকিৎসকরা একে জিনগত সমস্যার কারণবলেছেন। শিশুটিকে একনজর দেখতে হাসপাতালে উৎসুক মানুষের ভীড় জমে।
জানা গেছে, এক বছর পূর্বে অলিমদ্দিন পাড়ার ওই দম্পতির বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হন। নিয়মিত ডাক্তারী পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করানো হয়। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ৮মাসের মাথায় গত ৮ই মে রাতে ওই গৃহবধূ পেটে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সে ওই বিকলাঙ্গ অদ্ভুত শিশুটির জন্ম দেয়। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুটি স্বাভাবিক শিশুর মতোই নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করলেও প্রায় ৩ঘন্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা যায়।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, সদ্য ভূমিষ্ঠ বিকলাঙ্গ শিশুটির কোমরের উপরের অংশটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও ফুটফুটে সুন্দর চেহারার। দু’টি হাত, নাক, কান, চোখ, মুখ মাথায় কালো চুল সব মিলিয়ে একটি পরিপূর্ণ শিশু। কিন্তু তার কোমরের নীচের অংশের অঙ্গগুলোর কোনটিই নেই। যৌনাঙ্গ না থাকায় শিশুটি ছেলে না মেয়ে তা বোঝা যায়নি। এছাড়া নেই কোন পায়ুপথ। কোমরের নীচের অংশে দু’টি পায়ের পরিবর্তে একটি বড় মূলার মতো দেখতে লেজ সদৃশ একটি অঙ্গ। এ অবস্থায় হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ শিশুটিকে ঢাকা শিশু হাসপতালে স্থানান্তর করেন। কিন্তু সেখানে রওনা দেয়ার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আসিফ মাহমুদ বলেন, এ ধরণের শিশুর জন্ম নেয়া খুবই বিরল ঘটনা। জিন সমস্যার কারণে এ ধরণের শিশুর জন্ম হতে পারে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মারমেইড চাইল্ড বা জলপরী বলে। বিশ্বের উন্নত দেশে এ ধরণের শিশু চিহ্নিত হওয়ার পর পরই অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে ভ্রুন অবস্থাতেই গর্ভপাত করে ফেলা হয়। কেননা জন্মের পর এ ধরণের শিশুর বেঁচে থাকার কোন নিশ্চয়তা থাকে না।