॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো দিয়ে ও বিভিন্ন সরু সড়ক দিয়ে দিন-রাত বেপরোয়াভাবে ফিটনেস বিহীন বালু ও মাটিবাহী ট্রাক চলাচলে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।
এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ এবং ভোট যানবাহনকে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় সড়কে চলাচলসহ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফিটনেস বিহীন বিহীন ও সড়কে চলাচলের অযোগ্য ট্রাক ও ড্রাম ট্রাকগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। অধিকাংশ সময়ই হেলপাররা এসব ট্রাক চালাচ্ছে। ফলে শহরে ছোট ও বড় দুর্ঘটনাও বেড়ে গেছে। এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জোরালো দাবী উঠেছে।
সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, রাজবাড়ী শহরের প্রধান সড়ক, হাসপাতাল সড়ক ও বিভিন্ন সংযোগ সড়কসহ অন্যান্য সড়ক দিয়ে দিন-রাত ২৪ঘন্টাই বালুবাহী ট্রাকগুলো চলাচল করছে। অধিকাংশ ট্রাকের অবস্থাই লক্কর-ঝক্কর এবং চলাচলের সময় বিপুল পরিমাণে দূষিত কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে যায়। এছাড়া নিয়ম থাকলেও ট্রাকগুলোতে পরিবহন করা বালু ঢেকে রাখা হয় না। ফলে ট্রাকগুলো চলাচল করার সময় ধুলাবালু ও কালো ধোঁয়ায় একাকার হয়ে যায়, যা নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করছে।
সম্প্রতি হাসপাতাল সড়কের সারের গোডাউন এলাকায় বালুবাহী একটি ট্রাকের দুর্ঘটনায় এক প্রতিবন্ধী রিক্সা চালকের মৃত্যুর ঘটনায় জনরোষের ভয়ে দিনের বেলায় ট্রাকগুলো ওই এলাকা এড়িয়ে চলাচল করছে। শহরের ২নং রেলগেট দিয়ে ঢোকার পর গার্লস স্কুলের সামনের সংযোগ সড়ক ও মহিলা কলেজের সংযোগ সড়ক দিয়ে প্রধান সড়ক হয়ে গন্তব্যে আসা-যাওয়া করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দু’টির সামনে দিয়ে চলাচল করায় শিক্ষার্থীরা দূষণের শিকার হচ্ছে এবং উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
গার্লস স্কুলের(রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) তামান্না নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুলে প্রবেশ ও বের হওয়াসহ আসা-যাওয়ার সময় বেপরোয়া ট্রাকগুলোর কারণে আমরা সবসময় চাপা পড়ে মারা যাওয়ার আতংকের মধ্যে থাকি। এছাড়া ট্রাকগুলো তীব্র কালো ধোঁয়া ও ধুলাবালু উড়াতে উড়াতে যায়। আমাদের নাক-মুখ চেপে নিঃশ্বাস নিতে হয়। কাপড়-চোপড় নোংরা হয়ে যায়। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।
লাবনী আক্তার নামের এক অভিভাবক বলেন, গার্লস স্কুলের সামনে দিয়ে মক্তব মোড় হয়ে যেভাবে ট্রাকগুলো চলাচল করে তা দেখলেই ভয় লাগে। সন্তানদের জন্য সবসময় টেনশনে থাকি। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম খান বলেন, ট্রাকগুলো যেভাবে বেপরোয়াভাবে দ্রুত গতিতে চলাচল করে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে স্কুলের ক্লাস শুরু ও ছুটির সময় আমাদের টেনশন বেড়ে যায়। জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয়ে সামনে স্পিডব্রেকার নির্মাণ করাসহ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করা রাজবাড়ী জজ কোর্টের আইনজীবী রহিমা খাতুন লিলি বলেন, ট্রাকগুলো যেভাবে চলাচল করে তা দেখেই বোঝা যায় চালকরা দক্ষ নয়। এজন্য মাঝে-মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। অবিলম্বে এগুলোর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
সচেতন মহল অনতিবিলম্বে ফিটনেস বিহীন বালু ও মাটিবাহী ট্রাকের বিরুদ্ধে “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।