॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ ঝড়ে উড়িয়ে নিয়েছে রাজবাড়ীর সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পূর্ব উড়াকান্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের ছাদ।
গত ৩১শে মার্চের ঝড়ে বিদ্যালয়ের ছাদটি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পর খোলা আকাশের নীচে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রচন্ড রৌদ্রের মধ্যে পাঠদান করছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে বৃষ্টি শুরুর সাথে সাথে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
বিদ্যালয়টিতে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ১৬৮জন শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হলেও বিদ্যালয়ের অন্য কোন ভবন না থাকায় খোলা আকাশের নীচেই চলছে পাঠদান। আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথে ছুটি দেয়ার কারণে ভিজতে ভিজতে বাড়ী যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। যে কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার কমে গিয়েছে। হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টির সময় শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়ার কারণে রয়েছে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি। ঝড়ে বিদ্যালয়ের ছাদ উড়ে যাওয়ার পর সরকার থেকে মাত্র ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ স্থানীয়দের। শিক্ষার্থীদের দাবী স্থায়ীভাবে তাদের স্কুলের মেরামতের।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম বলেন, বিদ্যালয়ের ছাদ উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এর মধ্যেও আমরা ক্লাস করছি। ক্লাস চলাকালীন ৪/৫দিন বৃষ্টি শুরু হলে স্যারেরা ছুটি দিয়েছে। আমরা ভিজতে ভিজতে বাড়ীতে গিয়েছি। আমাদের বই-খাতা বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে।
এ নিয়ে ক্ষোভ স্থানীয় অভিভাবকদের। নাম প্রকাশ না করে এক অভিভাবক বলেন, আজ প্রায় ১৬দিন হতে চললো কিন্তু বিদ্যালয়টি ঠিক করা হয়নি। আপনার কাছ থেকে শুনলাম এখানে ২৫হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দিয়ে ছাদ নির্মাণ করা হলে ছাদসহ বিদ্যালয় ভেঙ্গে বড় ক্ষতি হতে পারে। আমি আমার ছেলেকে অন্য স্কুলে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মর্জিনা খাতুন আন্না বলেন, ১৯৯৪ সাল থেকে ৪বার বিদ্যালয়ের ছাদ উড়িয়ে নিয়ে গেলেও স্থায়ীভাবে কোন সমাধান হয় নাই। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান চলছে। নানা সমস্যার কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এখন বৈশাখ মাস। হঠাৎ করে ঝড় উঠে আসে, বজ্রপাত হয়। সে সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম বিপাকের মধ্যে থাকতে হয়।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাঈদুজ্জামান খান বলেন, বিদ্যালয়টি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সম্পর্কে অবগত রয়েছি। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে কথা হয়েছে। অস্থায়ীভাবে মেরামতের জন্য ২৫হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। আরো টাকার প্রয়োজন হলে স্থানীয়দের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে মেরামতের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। আপাতত শিক্ষার্থীদের অন্য স্কুলে পাঠদানের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।