॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কম উৎপাদন হওয়ায় এবং দাম না পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন পেঁয়াজ চাষীরা। তারা বলছেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিক থেকে বৃষ্টিপাত ও নিচু অঞ্চলে জলাবদ্ধতা হওয়ায় পেঁয়াজের ফলন কম হয়েছে। এর পাশাপাশি উৎপাদিত পেঁয়াজের দামও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তারা লোকসান গুনছেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষী আমজাদ মন্ডল বলেন, এ বছর টানা বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের ফলন কম হয়েছে। গত বছর যেখানে ২৫ শতাংশ জমিতে ৩৫ থেকে ৪০ মণ পেঁয়াজের ফলন হয়েছে, এ বছর সেখানে ১৫ মণ ফলন হচ্ছে। বছরের প্রথম দিকে ৩০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয়েছে। এখন ৬০০ টাকা করে দাম পাওয়া গেলেও ক্ষতি পোষানো যাচ্ছে না।
কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের কৃষক হাতেম আলী বলেন, এক পাখি(২৫ শতাংশ) জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এ বছর ১৫ থেকে ১৬ মণ করে ফলন হচ্ছে। যার ফলে উৎপাদন খরচও তোলা যাচ্ছে না। প্রতি বছর আমরা নিজস্ব পদ্ধতিতে ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতাম। কিন্তু এবার অতিবৃষ্টির পানি পাওয়া পেঁয়াজ নিজস্ব পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা নিয়েও শংকা দেখা দিয়েছে।
তবে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ জেলা কৃষি বিভাগ। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, জেলায় ২৭ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও ২৮ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। গত মাসের বৃষ্টিতে কৃষকদের ক্ষতি হয়েছিল ঠিকই, তবে শেষ পর্যন্ত ফলন বৃদ্ধি হয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজের সরবরাহ বেশী থাকায় কৃষকরা দাম একটু কম পাচ্ছে। তবে কৃষকরা যেহেতু তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবে, সেক্ষেত্রে কিছুদিন পর তারা পেঁয়াজের ভালো দাম পাবে।