Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন

বাংলাদেশ হাই কমিশন, সিঙ্গাপুরের উদ্যোগে গত ২৬শে মার্চ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ৪৯তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়।
সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচীর সূচনা করেন সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও জাতির সুখ, শান্তি, কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। পরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনোনো হয়। হাই কমিশনার তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মা-বোনদের আত্মত্যাগ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ গড়া ও দেশের উন্নয়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ সময়ের সাথে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন অনুষ্ঠানকে একটি ভিন্ন মাত্রা প্রদান করে।
সন্ধ্যায় হাই কমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের ৪৯তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিঙ্গাপুরের অভিজাত হোটেল মেরিনা মান্দারিনের বলরুমে আয়োজিত এই সংবর্ধান অনুষ্ঠানে সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ, সিঙ্গাপুরস্থ বিভিন্ন মিশনের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশীগণ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে সিঙ্গাপুর সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র প্রতিমন্ত্রী ডঃ এমি খোর (উৎ. অসু কযড়ৎ) ছাড়াও স্বাগতিক সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দু’জন পার্লামেন্ট সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুর সফররত সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু, সংসদ সদস্য ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আগামী দিনে দু’দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র বিমোচন, বিশ^শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবদান ও অর্জন তুলে ধরেন। বর্তমান উন্নয়নশীল দেশের অবস্থান হতে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে তিনি সরকারের অভিকল্প তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ এবং সরকারী বিনিয়োগ সহায়ক নীতি বর্ণনাপূর্বক সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। হাই কমিশনার এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী কয়েকটি বৃহৎ শিল্প-বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখপূর্বক অনান্য প্রতিষ্ঠানকেও বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত বিশেষ সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। প্রধান অতিথি সিঙ্গাপুরের প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে অত্যন্ত উষ্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিরাজমান। আগামী দিনে এ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করতে দু’দেশের সরকারই আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হাই কমিশন “ইধহমষধফবংয ইবপশড়হং” শিরোনামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করে, যা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের জনপ্রিয় দৈনিক “ঞযব ইঁংরহবংং ঞরসবং”-এ দুই পৃষ্ঠাব্যাপী রঙিন ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয় -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।