Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

প্রিন্টার বিকল থাকায় দীর্ঘদিন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের এক্স-রে বন্ধ॥কর্তৃপক্ষ উদাসীন!

॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ প্রিন্টার নষ্ট থাকায় দীর্ঘদিন ধরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে বন্ধ রয়েছে। ফলে রোগীদের এনালগ এক্স-রে করাতে হচ্ছে। তারা ডিজিটাল এক্স-রে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর আইকো কোম্পানীর তৈরী ৫০০ এম এ এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করে বেঙ্গল সায়েন্টিফিক এন্ড সার্জিক্যাল কোং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালের ১২ই আগস্ট হঠাৎ করেই মেশিনটির প্রিন্টার বিকল হয়ে পড়ে। এ জন্য প্রিন্টারের প্রায় ৯ হাজার পিস ফিল্ম অলস পড়ে আছে, যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা। এরপর অনেকবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়েও কোন সুরাহা পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সদর হাসপাতালে সেবা নিতে আসা হাত ভাঙ্গা রোগী লিজা খাতুন(২২) বলেন, হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় এক্স-রে করাতে এসেছি। এখন শুনলাম হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন নষ্ট। তাই বাধ্য হয়ে এনালগ এক্স-রে করালাম।
বুকের এক্স-রে করাতে আসা আরশেদ মোল্লা(৫০) বলেন, ডিজিটাল এক্স-রে হলে ভালোভাবে শরীরের ভিতরের হাড্ডি দেখা যায়। সঠিক চিকিৎসা হয়। হাসপাতালের লোকেরা বলছে মেশিন নষ্ট।
বুকের এক্স-রে করাতে আসা ময়না বেগম(৪০) নামের আরেকজন বলেন, ক্লিনিকে একটি ডিজিটাল এক্স-রে করাতে গেলে লাগে ৫শ টাকা। সরকারী হাসপাতালে লাগতো ২শত টাকার মতো। গরীব মানুষ এতো টাকা কোথায় পাবো।
রাজবাড়ী সদরের বড়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মোঃ রফিক বলেন, ১০ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতুলের খেলতে গিয়ে হাত ভেঙ্গে গেছে। ডাক্তার ডিজিটাল এক্স-রে করাতে বলেছে। সদর হাসপাতালে এসে দেখি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন নষ্ট। তাই বাধ্য হয়ে এনালগ এক্স-রে করাচ্ছি।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মোঃ মতিউর ইসলাম জানান, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের প্রিন্টার বিকল হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ডিজিটাল এক্স-রে হচ্ছে না। প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন হাসপাতালে এক্স-রে করাতে আসে। হাসপাতালে এনালগ এক্স-রে সেবা নিতে বড় ফিল্মে ৭০ টাকা ও ছোট ফিল্মে ৫৫ টাকা এবং ডিজিটাল এক্স-রে করাতে বড় ফিল্মে ২০০ টাকা ও ছোট ফিল্মে ১৫০ টাকা লাগে। এই ডিজিটাল প্রিন্টারের প্রায় ৯হাজার ফিল্ম পড়ে আছে যা এই প্রিন্টার ছাড়া অন্য কোন প্রিন্টারেই ব্যবহার করা সম্ভব না।
হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ দিপক কুমার বিশ^াস জানান, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিেেনর প্রিন্টারটি সচলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার ফোন ও চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।