॥রাঙামাটি প্রতিনিধি॥ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল আর মিলার। গতকাল ৬ই মার্চ রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে জাতিসংঘের (ইউএন) উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড এবং ইউএনডিপির বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প পরিদর্শনেরকালে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দেয়া সংক্ষিপ্ত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার জানান, বাংলাদেশে দায়িত্বগ্রহণের পর এবারই প্রথম পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করছেন তিনি। সফরের মূল উদ্দেশ্য- জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থার বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকান্ড দেখা এবং অঞ্চলটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করা। ইউএসএইড এবং ইউএনডিপির বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর উন্নয়ন কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নে “চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টস ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টিভিটি (সিএইচটিডব্লিউসিএ)” নামে ৬ বছর মেয়াদের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে- যা শেষ হবে চলতি বছরের শেষের দিকে। এতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির(ইউএনডিপি) মাধ্যমে বাংলাদেশের টাকায় ৬৭ দশমিক ২ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। প্রকল্পে সহায়তা করছে- বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের সার্বিক উদ্দেশ্য হচ্ছে- পাহাড়ে টেকসই বন ব্যবস্থাপনাকে এগিয়ে নেয়া, জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের টেকসই জীবিকা অর্জনে সহায়তা করা। এসব কার্যক্রমে স্থানীয় কমিউনিটি এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন ও জলাভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দেয়া।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, প্রকল্পে কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে- বনাঞ্চলের চিহ্নিত জল বিভিাজিকা গুলোর কমিউনিটি ভিত্তিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, কমিউনিটির যৌথ ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতামূলক পদ্ধতি অনুসরণ করা- যাতে সরকার ও স্থানীয় কমিউনিটিগুলো সহযোগী হিসেবে সমতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে আনতে সংরক্ষিত এলাকা ও তার আশেপাশে বসবাসরত বাংলাদেশীদের জীবিকার মানোন্নয়নসহ তাতে বৈচিত্র্য আনা এবং পাহাড়ের ঢালে টেকসই চাষাবাদ কৌশল গ্রহণের বিষটিকে এগিয়ে নেয়া। আমরা এসব কর্মসূচিকে চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত সম্প্রসারিত করতে চাই। এ ছাড়া ইউএসএইড-এর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
এ সময় ইউএসএইডের বাংলাদেশের প্রধান ডরিগ ব্রাউন, রাষ্ট্রদূত মিলার সহধর্মিনী মিশেল এডেলম্যান, বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের প্রেস বিশেষজ্ঞ রিকি সালমিনা, ইউএনডিপির পার্বত্য চট্টগ্রামের সিএইচটিডিএফ প্রকল্পের সমন্বয়নকারী প্রসেনজিৎ চাকমা, ঐশর্য্য খীসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বন সংরক্ষক সানা উল্লাহ পাটোয়ারীসহ অন্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ব্যাঙছড়ি গ্রামবাসীর পক্ষে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, গ্রামপ্রধান মংসিহ্লা থোয়াই কারবারি।
মার্কিন দূতাবাসের প্রেস বিশেষজ্ঞ রিকি সালমিনা জানান, রাঙামাটিতে দুই দিনের সফরসূচির মধ্যে কাল ৭ই মার্চ রাঙামাটির বরকল উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় ইউএনডিপি এবং ইউএসএইড বাস্তবায়িত প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।