॥শিহাবুর রহমান॥ বালিয়াকান্দি উপজেলার পদমদী গ্রামে দুই সন্তানের জননী(২৫)কে গণধর্ষণ ও ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেছে ৫ যুবক। শুধু তাই নয় ধর্ষণের ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে ২৫হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।
এ অভিযোগে গত ২৭শে ফেব্রুয়ারী রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৫জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ৩০ তৎসহ প্রণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(১)(২)(৩)ধারায় মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ।
মামলার আসামীরা হলো- বালিয়াকান্দি উপজেলার ঠেঙ্গাবাড়ীয়া মৃত আবু বক্করের ছেলে শামীম(২৫), কুরশীর সোনাইডাঙ্গী গ্রামের মমিন মন্ডলের ছেলে মর্তুজা(২০), আয়ুব আলীর ছেলে মনির(২৫), খালেক শেখের ছেলে সোহেল(২৬) ও একই গ্রামের মাজেদের ছেলে সাব্বির(২০)।
ওই গৃহবধূ জানান, তার ছেলে(৮) ঠেঙ্গাবাড়ীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার পড়ে। বাড়ী থেকে ওই মাদ্রাসার দুরত্ব এক কিলোমিটার। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর তিনি ছেলেকে খাবার দেয়ার জন্য ওই মাদ্রাসায় যান। গত ৩রা জানুয়ারী সন্ধ্যায় ছেলেকে খাবার দিয়ে ফেরার পথে কুরশী সোনাইডাঙ্গা গ্রামে মোজাইর কলাবাগানের কাছে পৌছালে উল্লেখিতরা তাকে ঘিরে ধরে। এসময় সে দৌড় দিলে তারা তাকে ল্যাং মেড়ে ফেলে দিয়ে চাঁদর দিয়ে মুখ বেধে ফেলে। এরপর তারা তাকে ওই কলাবাগানের মধ্যে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল দিয়ে ভিডিও করে।
তিনি আরো জানান, পালাক্রমে ধর্ষণের পর তারা তাকে হুমকি দেয় যে, এ ঘটনা কাউকে বললে তোর মেয়েকেও ধর্ষণ করা হবে এবং তোর সন্তানকে মেরে ফেলা হবে। এরপর তারা ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। এ ঘটনার দুইদিন পর মর্তুজা তার বাড়ীতে এসে ধর্ষণের ভিডিও অনেকের মোবাইলে দিয়েছে বলে প্রকাশ করে। এরপর সে টাকা না দিলে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিলে সে তাকে ২৫ হাজার টাকা দেয়। পরবর্তীতে তারা আবারো তার কাছে টাকা চাইলে তিনি বিষয়টি তার স্বামী ও আত্মীয়-স্বজনদেরকে জানান। এরপর তারা বালিয়াকান্দি থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান এবং পুলিশ তার জবানবন্দী নেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করেন এবং অভিযুক্ত মর্তুজা, মনিরুল ও সোহেলের অভিভাবক এবং সাক্ষী আলামিনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করেন। এরপর থানা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার আশ^াস দেন। কিন্তু পরবর্তীতে মামলা না নিয়ে গড়িমসি করেন।
ফলে তিনি বাধ্য হয়ে গত ২৭শে ফেব্রুয়ারী রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত ৫জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন।
বালিয়াকান্দিতে গৃহবধূকে গণধর্ষণ ও ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করে টাকা আদায়ের অভিযোগ॥৫জনের বিরুদ্ধে মামলা
