Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

চালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার দর ও স্টক পরিস্থিতি মনিটরিং করলেন ডিসি

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর সহনীয় রাখতে ও অস্বাভাবিক মজুদ রোধসহ সরবরাহ ঠিক রাখতে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শওকত আলী গতকাল ১৯শে জানুয়ারী সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজবাড়ী বাজার পরিদর্শন এবং চালসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার দর ও স্টক পরিস্থিতি মনিটরিং করেন।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আলমগীর হুছাইন, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুল্লাহ, রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট সিরাজুল ইসলাম ও জাকির হোসেন, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন মন্ডল, চাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বেনজীর আহমেদ এবং কাপড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি আঃ বাতেনসহ ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাজার পরিদর্শনকালীন সময়ে জেলা প্রশাসক বাজারের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর সারা দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চালসহ সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সিন্ডিকেট করে দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নিজেরা লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে। সেই অনুযায়ী রাজবাড়ী বাজারে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য পরিস্থিতি কতটুকু স্বাভাবিক রয়েছে সেটা পর্যবেক্ষণের জন্য আমি পরিদর্শনে এসেছি। আপনাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেহেতু সরবরাহ স্বাভাবিক আছে সে জন্য কোন অবস্থাতেই অধিক লাভের আশায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা যাবে না। পাইকারী বাজারের সাথে অবশ্যই খুচরা বাজারের সামঞ্জস্য রেখে পণ্য সামগ্রী বিক্রি করতে হবে।
তিনি বলেন, আশা করি রাজবাড়ীর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে প্রশাসনসহ সকলের যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে সে বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রেখে বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। সেটি করা না হলে সরকারের ভাবমূর্তি ও রাজবাড়ীবাসীর স্বার্থ রক্ষার স্বার্থে আমাকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসক বাজার পরিদর্শনের প্রথমে চাল বাজারের পাইকারী বিক্রেতা এবং চাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেনজীর আহমদের মালিকানাধীন কাজী ট্রেডার্সে বিভিন্ন ধরনের চালের বাজার দর, পাইকারী ক্রয়কৃত চালের চালান ফর্দসমূহ, সেই চাল খুচরা বাজারে কি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে সে সকল বিষয় যাচাই করেন এবং বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ বাজারে আগত জনসাধারণের সাথে আলাপ করেন। এরপর খুচরা চাল বিক্রেতা জীবন সাহার দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন তিনি একটু বেশী দামে চাল কিনেছেন। তৎক্ষণাৎ তিনি পাইকারী বিক্রেতা দীন ইসলামকে তলব করেন এবং তার চালানের ফর্দসমূহ যাচাই করে তাকে স্বল্প লাভে চাল বিক্রির পরামর্শ দেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে নজর রাখার জন্য তিনি চাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতিরি নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। এরপর তিনি চাল বাজার হতে পাট বাজার যাওয়ার সময় চাল বাজার ও পাট বাজার সংযোগকারী রাস্তার সাথেই মিষ্টির দোকানের নির্মিত চুলা ও বিক্রি সামগ্রী অপসারণের জন্য হোটেল মালিককে নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে তাকে সতর্ক করেন। তিনি ঐ একই রাস্তায় অবস্থিত সোহাগ স্টোর নামের একটি মুদী দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি চাল-ডালসহ অন্যান্য দ্রব্যের খুচরা বাজার দর যাচাইকালে মসুর ডালের মূল্য বেশী পরিলক্ষিত হওয়ায় দোকান মালিকের কাছে দাম বেশী নেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চান। দোকান মালিক জেলা প্রশাসককে ডাল সরবরাহকারী সাগর ট্রেডার্সের নিকট হতে বেশী দামে ডাল ক্রয় করেছেন জানালে তৎক্ষণাৎ তিনি ডাল মিল মালিক ও সরবরাহকারী সাগর ট্রেডার্সের মালিক হাজী দেলোয়ার হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন এবং বেশী দামে ডাল সরবরাহ না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে সর্তক করেন।
এছাড়াও তিনি বাজার পরিদর্শনকালীন সময়ে পালপট্টিতে অবস্থিত সরোওয়ার হার্ডওয়্যারের দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রির তথ্য যাচাইকালে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা কোন চালান দেখাতে না পারায় তাকে সতর্ক করেন এবং কাস্টমস ও ভ্যাটের সহকারী কমিশনারকে এ দোকানের তথ্যাদি যাচাই করে ২০শে জানুয়ারী(আজ) দুপুর ১২টার মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।
তিনি পান বাজার অভিমুখী রাস্তার মাঝখানে অবস্থিত মেসার্স হক কৃষি ভান্ডারে গিয়ে রাসায়নিক সারের বাজার দর যাচাই করেন এবং স্বল্প লাভে সার বিক্রির জন্য দোকানদার রেজাউল হক বাদশাকে নির্দেশনা প্রদান করেন।