পাংশা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হেভিওয়েট ৪জন মাঠে তৎপর!

॥মোক্তার হোসেন॥ আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০১৯ সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় আওয়ামী লীগের ৪জন হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা সরব হয়েছেন। সেইসাথে নতুন মুখের সম্ভাবনা নিয়েও এলাকায় লোকমুখে গুঞ্জন উঠেছে।
জানা যায়, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাংশা সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসান আলী বিশ্বাস, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মাছপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান খোন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য আহম্মদ হোসেন স্ব-স্ব অবস্থান থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এলাকায় জনমত গঠনসহ নেতাকর্মীদের সাথে লবিং শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা।
এদিকে, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী উঠেছে তৃণমূলসহ দলের মধ্যে। নানান কারণে দলের মধ্যে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ।
ফলে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি আরুজ। পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ এরআগে পাংশা পৌরসভার মেয়র পদে ও রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন। এবারে তিনি তার পারিবারিক ও নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের স্বীকৃতি চান।
তার জন্ম পাংশার ঐতিহ্যবাহী একটি আওয়ামী পরিবারে। পিতা মরহুম গওহার উদ্দিন ছিলেন পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ১৯৮৭ সাল পর্র্যন্ত তিনি পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। রাজবাড়ী মহকুমা ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। পাংশা সরকারী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সদস্য ছিলেন।
ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজের রাজনৈতিক জীবনের শুরু। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর তিনি ১৯৭৬ সালে পাংশা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে ২বার হল ছাত্র সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক(সম্মান) ও ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জনের পর ১৯৮৫ সালে পাংশা কলেজে চাকুরীতে যোগদান করেন এবং থানা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা শুরু করেন। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাংশা থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সাল থেকে অদ্যাবধি পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ১৯৯০ সাল থেকে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
একে.এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ পাংশা কলেজের উপাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন। পাংশা কলেজ সরকারীকরণে রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিমের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সহযোগিতা জোগান তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ।
সূত্রমতে, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী বিশ্বাস দলীয় মনোনয়ন পেয়ে একটার্ম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা হিসেবে তার সুনাম ও সুপরিচিতি রয়েছে।
এছাড়াও আহম্মদ হোসেন তিনবার সরিষা ইউপির চেয়ারম্যান এবং পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে একটার্ম নির্বাচিত হন। বর্তমানে রাজবাড়ী জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য তিনি। সরিষা ইউপিসহ দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার গুরুত্ব রয়েছে।
পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি খোন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো মাছপাড়া ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে তার সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। এলাকায় আওয়ামী লীগ সুসংগঠিতকরণে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রসংশনীয়।
অপরদিকে, পাংশা উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা মাহমুদ হেনা মুন্সী পুনরায় দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে জনমত গঠনে মাঠে নেমেছেন।
উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদা আহম্মেদ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত ৩৮নং আসনের মনোনয়নের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন।
পাংশা পৌরসভা মহিলা লীগের সভাপতি ও মাছপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফুরা বেগম পাংশা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা গেছে। পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতা রাজবাড়ী-২ আসনের চতুর্থবারের মত নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিমের গ্রীণ সিগন্যাল পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।