॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের ভিতর দিয়ে এলজিইডির পাকা সড়ক থাকায় ঝুকিতে আছে শিশু শিক্ষার্থীরা। প্রতিনিয়ত সড়কটি দিয়ে হরহামেশা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে। যে কোন মুহুর্তে প্রাণহানির মতো দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চারদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ বিকল্প সড়কের দাবী জানিয়েছে। বিদ্যালয়ে দেখা যায়, হাউলি কেউটিল এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামোর প্রায় ৬কিলোমিটার কাটাখালী জিসি টু খানখানাপুর পাকা সড়কটি রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর গেছে। সড়কের উত্তর দিকে হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ঘর এবং দক্ষিণে আরেকটি পাকা দ্বিতল ভবন। বিদ্যালয়ের মধ্যদিয়ে এভাবে পাকা সড়ক চলে যাওয়ায় প্রতি নিয়তি সড়ক অতিক্রম করে শিক্ষকগন শ্রেণী কক্ষে ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার মাঠ না থাকায় সড়কের ওপর খেলাধুলা করছে। এরমধ্যে কোন যানবাহন আসলে শিক্ষার্থীরা কোন রকম জায়গা ছেড়ে পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। গোয়ালন্দ থেকে রাজবাড়ীতে সহজ ও স্বল্প সময়ে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় সড়ক। প্রতিনিয়ত ওই সড়কটি দিয়ে ভারী যানবাহনসহ কয়েকশ তিন চাকার গাড়ি চলাচল করে থাকে। কয়েকশ ইঞ্জিন ও ব্যাটারী চালিত গাড়ি যাত্রী আনা নেয়ার কাজ করে। যেভাবে বিদ্যালয় চলাকালিন ছেলে-মেয়েরা চলাচল করে তাতে যে কোন মুহুর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। নিয়মিত যাত্রী বহন করেন অটোরিক্সা চালক ওসমান বেপারী বলেন, বিকল্প সড়ক দিয়ে রাজবাড়ী যেতে হলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরতে হয়। সহজ ও স্বল্প সময়ে গোয়ালন্দ থেকে রাজবাড়ী যাতায়াতের জন্য বা পাঁচুরিয়া রেলস্টেশন যাতায়াতের জন্য এই সড়ক দিয়ে আসাযাওয়া করি। বিদ্যালয় চলাকালীন এখানে আসা মাত্র আমরাও আশঙ্কায় থাকি কখন জানি দুর্ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুর রহমান বলেন, দুই পাশে ভবন রেখে মধ্যদিয়ে এভাবে পাকা সড়ক নির্মাণ হওয়া কতটুকো যুক্তিসঙ্গত আমার বুঝে আসেনা। শুধু নিজের সন্তান নয়, সব সন্তানই এখানে ঝুকিতে থাকে। বুকের ভিতর ধুক ধুক করতে থাকে কখন যেন কোন দুর্ঘটনার সংবাদ আসে? হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম ইয়াছিন বলেন, বাড়তি জায়গা না থাকায় বিদ্যালয়ের এ্যাসেম্বেলি, সমাবেশ ওই রাস্তার ওপর করতে হয়। এছাড়া টিফিন বা ছুটির সময় প্রায় ২৫০জন বাচ্চাকে সহজে ধরে রাখা যায়না। সবাই দৌড়াদৌড়ি করে। যে কারণে সব সময় শিশুরা ঝুকিতে থাকে। হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আসজাদ হেসেন বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যদিয়ে এভাবে সড়ক যাওয়ায় সব সময় একটা দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। পাকা ভবনের পিছন দিয়ে বিকল্প সড়ক তৈরী করে শিশুদের নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মালেক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্থানীয়ভাবে জায়গা নিতে উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছি। কিন্তু তেমন সহযোগিতা পাননি বলে জানিয়েছেন। এজন্য বিদ্যালয়ের পিয়ন দিয়ে অন্তত ছেলে-মেয়েরা যাতায়াতকালে যাতে নির্বিঘেœ পারাপার হতে পারে তা দেখভাল করতে বলেছি। এছাড়া বিষয়টি সকলের সম্বনিত উদ্যোগ প্রয়োজন। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ২০০৩-২০০৪ অর্থ বছরে গোয়ালন্দ-রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাধের হাউলি কেউটিল গ্রাম থেকে শুরু করে তিন কিলোমিটার কাটাখালী জিসি টু খানখানাপুর সড়কটি নির্মিত হয়। স্থানীয়রা জায়গার ব্যবস্থা করে দিলে বিদ্যালয়ের পিছন দিয়ে সড়কটি করা সম্ভব। তবে তা অবশ্যই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এছাড়া রাস্তা আলাদা রেখে বিদ্যালয়ের দুই ভবন নিরাপত্তার মধ্যে রাখতে হলে আলাদাভাবে সীমানা প্রাচীর করতে হবে। এ ধরনের প্রাচীর নির্মাণের বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানানেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, শিশুরা যাতে নিরাপদে পাঠদান করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উত্থাপন করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
গোয়ালন্দে স্কুলের মাঠে পাকা সড়ক-ঝুঁকিতে শিশু শিক্ষার্থীরা
