Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী সদর উপজেলাতে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

॥এম. দেলোয়ার হোসেন॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাওরিয়া গ্রামের মাঠে-প্রান্তরের যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদ রঙের সরিষা ফুলের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমারোহে হৃদয়-মন তৃপ্ত হয়ে যায়। মৌমাছিসহ বিভিন্ন পোকা-মাকড়, পাখির গুণগুণ শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহের দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। সেই সঙ্গে কৃষকের চোখে-মুখে সরিষার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন।
চলতি রবি মৌসুমে তৈলবীজ সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে রাজবাড়ী সদর উপজেলাতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং চাষের পরিবেশ অনুকুলে থাকায় এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন সরিষা চাষীরা।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার সদর উপজেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮৮৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২০০ হেক্টর বেশী জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা চাষ করার জন্য কৃষি প্রণোদনার আওতায় ৮শতাধিক চাষীর মাঝে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। উন্নত জাতের সরিষা বীজের মধ্যে রয়েছে স্বল্প মেয়াদী টরি-৭ ও বারি-১৪, ১৫। প্রতি বছরই সদর উপজেলায় সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাওরিয়া গ্রামের বিস্তৃত বিল, শহীদওহাবপুর ইউপির নিমতলা বিল, বসন্তপুর, বরাট, দাদশী ইউপি’র বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। কম খরচে বেশী লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের জমিতে আগাম এই ফসলের চাষ করেছেন।
কাওরিয়া গ্রামের বক্কর শেখ, ইয়াসিন শেখ, হাকিম শেখ, মজিবর মোল্লাসহ কয়েকজন কৃষক জানান, সরিষা মৌসুমে ধান চাষের উপযুক্ত জমিতে তারা সরিষার আবাদ করেছেন। সরিষা তুলে নিয়ে ওই সব জমিতে তারা বোরো ধান রোপন করবেন। এছাড়া সরিষা উৎপাদনে সার কম প্রয়োগ করতে হয়, সেচ-কীটনাশক ও নিড়ানীর(পরিচর্যার) প্রয়োজন হয় না। স্বল্প সময়ে কম সময়ে এ ফসল হয়ে থাকে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ বাহাউদ্দিন সেখ জানান, উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা চাষ করার জন্য উন্নত জাতের সরিষা বীজের মধ্যে রয়েছে স্বল্প মেয়াদী টরি-৭ ও বারি-১৪, ১৫। চাষীরা একই জমিতে আমন ধান, সরিষা ও বোরো ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে কৃষকদের ভালো মানের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা পাবেন। পাশাপাশি লক্ষমাত্রাও অর্জন সম্ভব হবে।