Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

চাল কুমড়ার বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত বালিয়াকান্দির গ্রামীণ নারীরা

॥বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি॥ চালকুমড়ার বড়ি অনেক মানুষের কাছেই প্রিয়। নিরামিষসহ নানা ধরনের তরকারি এই বড়ি দিয়ে রান্না করলে স্বাদ বেড়ে যায়। সারা বছর কম-বেশী এই বড়ি তৈরী হলেও শীতকালই মূলতঃ এর মৌসুম।
এবারের শীতেও রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে গ্রামীণ নারীরা।
তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই সুস্বাদু বড়ি তৈরীর জন্য প্রথমে মাশকলাই পানিতে ভিজিয়ে নরম করে চট বা চটজাতীয় কাপড়ে ঘষে খোসা আলাদা করা হয়। এরপর খোসা ছাড়ানো ডাউল পাটায় বেটে মিহি করা হয়। অপরদিকে পাকা চাল কুমড়া কেটে বিচি বের করে ভিতরে অংশ মিহি করে কাপড়ে মুড়িয়ে চিপে পানি বের করে ফেলা হয়। এরপর পানি নিংড়ানো চালকুমড়ার অংশ পাটায় পিশে মিহি করা মাশকলাইয়ের ডাউল মিশিয়ে বড়ি তৈরী করে কাপড়ের উপরে রোদে শুকাতে দেয়া হয়। বাড়ীর আঙ্গিনায়, ঘরের চালে বা রৌদ্রযুক্ত স্থানে সারিবদ্ধভাবে এসব বড়ি শুকাতে দিতে দেখা যায়।
বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের কঠুরাকান্দি গ্রামের বড়ি প্রস্তুতকারক সবিতা রাণী দাস বলেন, এই বড়ি তৈরীতে বতি (পাকা) চাল কুমড়া আর মাশকলাইয়ের ডাল লাগে। মাশকলাইয়ের ডাউল ছাড়া অন্য ডাউলেও এই বড়ি তৈরী করা যায়। তবে মাশকলাই দিয়ে তৈরী বড়ি বেশী সুস্বাদু হয়। রোদে মচমচে করে শুকালে এর ভালো স্বাদ পাওয়া যায়। বড়ি ভালোভাবে শুকাতে ৩/৪ দিন লাগে। এই বড়ি নিরামিষসহ বিভিন্ন ধরনের তরকারির মধ্যে দিয়ে রান্না করলে স্বাদ বেড়ে যায়, খেতে মজা হয়। যার ফলে এই বড়ি অনেকের কাছেই প্রিয়। যারা এই বড়ি তৈরী করে না তারা কিনে নেয়। অনেকেই এই বড়ি আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ীতে পাঠায়। তাই চাহিদা থাকায় তার মতো অনেকেই এই বড়ি তৈরী করে বিক্রি করে। বর্তমানে ডাউল মিহি করার মেশিন আবিষ্কার হওয়ায় কেউ কেউ মিল থেকে ডাউল মিহি করে এনেও এই বড়ি তৈরী করে থাকে।
বর্তমানে বালিয়াকান্দি বাজার, জামালপুর বাজার, বহরপুর বাজার, সোনাপুর বাজার, নারুয়া বাজার, রামদিয়া বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে, মুদী দোকানগুলোতে এই চালকুমড়ার বড়ি কিনতে পাওয়া যায়।