॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউপির বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য সমাপ্ত ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচন বাতিলের জন্য রাজবাড়ীর বিজ্ঞ পাংশা সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করায় বিদ্যালয়ের নবগঠিত বিতর্কিত ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন না দেওয়ার জন্য উক্ত মামলার বাদী শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় দরখাস্ত প্রেরণ করেছেন।
ওই নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বি মৌরাট ইউপির বাগদুলী গ্রামের আজগর আলী মিয়া জানান, গত ২৮শে জানুয়ারী বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের কারণে নির্বাচন বাতিলে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ পাংশা সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-০৯/২০১৭, তারিখ ০২/০২/২০১৭। মোকদ্দমাটি শুনানীর জন্য গৃহীত হয়েছে যার পরবর্তী তারিখ ২২/০৩/২০১৭। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে তা অনুমোদনের জন্য তোড়জোড় চালাচ্ছে। বিজ্ঞ আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতর্কিত ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন না দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দরখাস্ত করেছেন তিনি।
জানাযায়, বাগদুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের জন্য ১৯/১২/২০১৬ তারিখে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ১১/০১/২০১৭ তারিখ হতে ১৩/০১/২০১৭ তারিখ বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা, ১৬/০১/২০১৭ তারিখ সকাল ১১টায় মনোনয়নপত্র বাছাই ও বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ, ১৮/০১/২০১৭ বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও ২৮/০১/২০১৭ নির্বাচনের দিন ধার্য হয়। বাদী আজগর আলী মিয়াসহ ১০জন প্রতিদ্বন্দ্বি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১০জন প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে ৮জন পুরুষ ও ২জন মহিলা। এর মধ্যে ৪জন পুরুষ ও ২জন মহিলা নির্বাচিত হবে। নির্বাচনে প্রার্থীগনের কোনো প্রতীক বরাদ্দ থাকে না। শুধুমাত্র প্রার্থীগণের নাম ব্যালট কাগজে লিপিবদ্ধ থাকে। ভোটারগণ ভোট প্রদানের জন্য প্রার্থীগণের নামের উপর ক্রস চিহ্নিত সিল মেরে ভোট দেন। ২৮ জানুয়ারী যথারীতি নির্বাচন হয়। কিন্তু ২নং বিবাদী প্রিজাইডিং অফিসার ইমদাদুর রহমান তালুকদার বেআইনী ভাবে কতক প্রার্থীগণের সাথে যোগসাজসে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ভোট প্রয়োগের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পুরুষ অভিভাবক সদস্যপদে ভোট গণনার সময় দেখা যায় ক্রস চিহ্নিত সিল ছাড়া কতক কতক ব্যালটে টিপ দিয়ে ভোট প্রদান করা হয়েছে। যাহা নিয়ম বহির্ভূত হওয়ায় উক্ত ব্যালট বাতিল যোগ্য হওয়া সত্বেও ব্যালটগুলি বাতিল না করে ব্যালটগুলি বৈধ ভোট হিসেবে গণনা করেন। প্রার্থীগণের পুলিং এজেন্টগণ বিভিন্ন ভাবে প্রিজাইডিং অফিসারের নিকট আপত্তি উত্থাপন করলেও তিনি আপত্তি অগ্রাহ্য করেন। পুরুষ অভিভাবক সদস্যগণের ভোট গণনাকালে দেখা যায় মোঃ শওকত আলী মন্ডল ৩৩৮ ভোট পেয়ে প্রথম হন, শওকত আলী সরদার ৩১৯ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন, কেছমত আলী শেখ ৩১৪ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন, বাদী আজগর আলী মিয়া ২৯৮ ভোট পেয়ে চতুর্থ হন, রফিকুল ইসলাম বাদশা ২৯৫ ভোট পেয়ে পঞ্চম হন। কিন্তু প্রিজাইডিং অফিসার রফিকুল ইসলাম বাদশার নামীয় ৩টি টিপ প্রদানকৃত বাতিল যোগ্য ভোট বাতিল না করে ভোটের সংখ্য ২৯৮ হিসেবে গন্য করেন। বাদী আজগর আলী মিয়ার ও ১নং বিবাদী রফিকুল ইসলাম বাদশার ভোটের সংখ্যা ২৯৮ভোট হিসাবে গন্য করে বেআইনী ভাবে লটারীর কথা বলে রফিকুল ইসলাম বাদশাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় বলে মামলায় দাবী করা হয়।