Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী-২ আসনে জাসদের প্রার্থী সুশান্ত বিশ্বাস প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে!

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু)’র মশাল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন সুশান্ত কুমার বিশ্বাস।
বর্তমানে জেলা জাসদের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুশান্ত কুমার বিশ্বাস ১৯৭২ সালে দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জাসদের রাজনীতির সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন তিনি জাসদের পাংশা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ২রা ডিসেম্বর জেলা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাকে ‘বৈধ প্রার্থী’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সুশান্ত কুমার বিশ্বাস তার রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘ কারাভোগ করাসহ অনেকবার হামলা-মামলা ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধুর খুনী খন্দকার মোশতাকের সরকারের সময় তাকে নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এতে তার বাম হাতসহ শরীরের একাংশ চিরতরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
নির্বাচনের বিষয়ে সুশান্ত কুমার বিশ্বাস মাতৃকণ্ঠকে বলেন, এটাই আমার জীবনের প্রথম এবং শেষ নির্বাচন। ইতিপূর্বে রাজবাড়ী-২ আসন থেকে জাসদের প্রার্থীরা মশাল প্রতীকে নির্বাচন করে ২বার বিজয়ী হন। তার মধ্যে ১৯৭৯ সালে ১ম বার আব্দুল মতিন মিয়া এবং ২য় বার ১৯৮৮ সালে মোসলেম উদ্দিন মোমেন মশাল প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন। সেই মশাল প্রতীক নিয়েই আমি আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঐক্যের প্রত্যাশা করি। স্বাধীনতার পক্ষের প্রগতিশীল যে সকল রাজনৈতিক দল রয়েছে তাদের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাসহ যে সকল ভালো কাজ করছে আমরা তা সমর্থন করি। পাশাপাশি ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাটসহ যা চলছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। আমরা অংশীদারিত্বের রাজনীতি ও দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট চাই। আগামী দিনের শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শ্রমজীবী-পেশাজীবী-ছাত্র-যুবসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা আমাদের পাশে থাকুন। সবার ভালোবাসা নিয়েই আমরা আগামীর পথে এগিয়ে যাবো।
সুশান্ত কুমার বিশ্বাস ১৯৪৮ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৃতঃ সুরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। তিনি রাজবাড়ী সরকারী কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন। সত্তরোর্ধ এই রাজনীতিক বিয়ে করেননি। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথেও জড়িত। একজন ভালো মানুষ হিসেবে তিনি সকলের শ্রদ্ধাভাজন।
সুশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি একজন আদর্শ মায়ের সন্তান। তিনি অত্যন্ত সাহসী নারী ছিলেন। তার কাছ থেকেই চলার পথের অনুপ্রেরণা পেয়েছি। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছিলেন। মহাত্মা গান্ধী, মাস্টারদা সূর্যসেন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এদের গল্প বলতেন। আমার স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তার শতভাগ সমর্থন ছিল। তবে রাজনীতির ব্যাপারে পুরোপুরি সমর্থন ছিল না। বলতেন-রাজনীতিই যখন করবি তখন কারো ক্ষতি করে মরিস না। এই রাজনীতি করতে গিয়েই কারাভোগ করাকালীন সময়ে বাবা-মাকে হারিয়েছি। আমার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বাকীটা জীবন মানুষের জন্যই কাজ করে যেতে চাই। আমার কোটি কোটি টাকা নেই, তবে সবার প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা আছে। সেই ভালোবাসা দিয়েই আমি আগামীর দিনগুলো কাটাতে চাই। তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে-তারাই ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে, তাই তারা যেন সুন্দর আগামীর জন্য তৈরী হয়। মাদক-জঙ্গীবাদ থেকে দূরে থাকে। তাদের প্রতি আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়াই থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিরতার মাঠে থাকা না থাকা নির্ভর করছে দলীয় সিদ্ধান্ত উপর।