Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

বালিয়াকান্দির পদমদীতে মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

॥বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি॥ কালজয়ী ঔপন্যাসিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭১তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমীর আয়োজনে গতকাল ১৫ই নভেম্বর রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে অবস্থিত মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কমপ্লেক্সে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে বাংলা একাডেমীর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী ও বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বক্তব্য রাখেন।
সভায় প্রাবন্ধিক ও শিশু বিষয়ক গবেষক আবুল মোমেন একক বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যর রাজবাড়ী সরকারী কলেজের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ফকরুজ্জামান মুকুট ও নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসান আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, মীর মশাররফ হোসেন বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধশালী করেছে। মীরের সাহিত্য তৎকালীন সময়ে মুসলিম সাহিত্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছে। আগামী ১মাসের মধ্যে এখানে লক্ষাধিক টাকার বই পাঠানো হবে।
তিনি আরো বলেন মীর মশাররফ হোসেনের লেখা প্রায় ৩০টি অধিক বইয়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যেগুলো সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। মীর মশাররফ হোসেনকে নিয়ে যদি কেই গবেষণা করতে চায় তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে মর্মে ঘোষণা দেন
বিকালে দ্বিতীয় অধিবেশনের আলোচনা সভায় রাজবাড়ী সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ফকীর আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদ, বালিয়াকান্দির সভাপতি অবঃ অধ্যক্ষ বিনয় কুমার চক্রবর্তী। আলোচনা সভার শেষে সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, মহাকাব্য ‘বিষাদ সিন্ধু’র রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ই নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মীর মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতার নাম দৌলতন নেসা। ১৮৬৯ সালে মীর মশাররফ হোসেনের লেখা রতœাবতী উপন্যাসটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ১৮৮৫ সালে অমর সৃষ্টি বিষাদ সিন্ধু, উদাসীন পথিকের মনের কথা, মদিনার গৌরব, হযরত ওমরের ধর্ম জীবন লাভ, গাজী মিয়ার বস্তানি, খোতবা, আমার জীবনী, রাজিয়া খাতুন, তাহমিনা, বাধা খাতা, বধূমাতা ইত্যাদি উপন্যাসসহ তার রচিত নাটক বসন্ত কুমারী ও জমিদার দর্পণ বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ১৯১১ সালের ১৯শে ডিসেম্বর তিনি পদমদী গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। তার সমাধিস্থলে সরকারীভাবে স্মৃতি কমপ্লেক্স তৈরী করা হয়েছে।