Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

ফিলিস্তিন প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদ কেবলমাত্র দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারে না —রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ফিলিস্তিন প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদ কেবলমাত্র দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারে না। তিনি বলেন, ‘ওআইসি সতর্ক করে দিতে চায়, এক্ষেত্রে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়’।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ওআইসির সভাপতি হিসেবে গত ১৮ই অক্টোবর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তৃতাকালে একথা বলেন। গতকাল শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। খবর বাসস।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সম্মিলিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে ফিলিস্তিন প্রশ্ন হতে পারে একটি লিটমাস পরীক্ষা’- একথা উল্লেখ করে ওই উন্মুক্ত আলোচনায় রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান আন্তর্জাতিক আইন, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা এবং ন্যায়বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের রেজুলেশনসমূহ, মাদ্রিদ নীতি এবং আরব শান্তি প্রক্রিয়াসহ আন্তর্জাতিকভাবে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো বিচার্য্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
মাসুদ বিন মোমেন উল্লেখ করেন, ‘অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলের ঔপনিবেশিক নীতির বিষয়ে ওআইসি বার-বার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছে। ইসরাইলের এ ঔপনিবেশিক আগ্রাসন পূর্ব জেরুজালেমের জনমিতিক গঠন, অবস্থান ও চেহারা এমনভাবে পাল্টে দিয়েছে যে, এরফলে এই ভূখন্ড সাবলীল ফিলিস্তিনী পরিবেশ থেকে একেবারেই আলাদা হয়ে গেছে। ঠিক এমনিভাবেই অনবরত ইসরাইলী পুলিশের নেতিবাচক আচরণের মাধ্যমে অপমানিত করা হচ্ছে পবিত্র আল আকসা মসজিদকে-যা সৃষ্টি করছে ভয়ঙ্কর উত্তেজনা।’
তিনি বলেন, “সহিংসতা ও বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা বেদনাদায়কভাবে বেড়েই চলেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখের সামনেই হত্যা করা হচ্ছে শিশু ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের।’
রাষ্ট্রদূত মাসুদ এ পরিস্থিতিতে ইসরাইলী অবরোধ সরিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দায়িত্বশীলতার সাথে সঙ্কটের সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আহ্বান জানান ।
তিনি বলেন, ‘যুগের পর যুগ কয়েক মিলিয়ন ফিলিস্তিনী শরণার্থী গৃহছাড়া, ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকেও বঞ্চিত। ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের রিলিফ এজেন্সী (দ্যা ইউনাইটেড নেশনস্ রিলিফ এন্ড ওয়ার্কস এজেন্সী ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিসইন দ্যা নেয়ার ইস্ট) আনরওয়া’র তহবিল সঙ্কটের ফলে এই মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বাস্ত্যুচ্যুত এসকল ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের নিজভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকারসহ তাদের মানবাধিকার সংরক্ষণে আনরওয়া’র তহবিল বৃদ্ধিও প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। এক্ষেত্রে তিনি সকল আন্তর্জাতিক পক্ষকে এগিয়ে আসার জোর দাবি জানান।
ফিলিস্তিনী জনগণের ন্যায়সঙ্গত জাতীয় আকাঙ্খা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্ত বন্টন অনুযায়ী স্বাধীন, সার্বভৌম ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকল্পে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফলপ্রসূ সহযোগিতা করারও আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চলতি মেয়াদে ওআইসির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।