Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

একটি ব্রিজ পাল্টে দিতে পারে রতনদিয়ার চরাঞ্চলের ২৫টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

॥শিহাবুর রহমান॥ মাত্র একটি ব্রিজের জন্য বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের প্রায় ২৫টি গ্রামের ২০হাজার মানুষ।
শুকনা মৌসুমে শত কষ্ট স্বীকার করে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের শেষ থাকে না এসব অঞ্চলের মানুষের। শুধু দুর্ভোগই নয় এ সময় অনেক ছাত্র-ছাত্রীর স্কুল ও কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রতনদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে পশ্চিম হারুয়া, মাধবপুর, কামিয়া, হরিনবাড়ীয়া, কৃষ্ণনগর ও বাঘলপুরসহ প্রায় ২৫টি গ্রামে ২০হাজার মানুষ বসবাস করে। এসব চরাঞ্চলের মাঝখান দিয়ে রয়েছে পদ্মা নদীর ছোট্ট একটি শাখা। যা নদীর কোল হিসেবে পরিচিত। আর এসব অঞ্চলের অধিকাংশই মানুষ যাতায়াত করে গঙ্গারামপুর হিরু মোল্লার ঘাট দিয়ে। এই ঘাটে রয়েছে প্রায় ১০০মিটার লম্বা একটি বাঁশের সাকোঁ। শুকনা মৌসুমে সবার ভরসাই এই সাকোঁ। শুধু মানুষই নয় মোটর সাইকেলসহ রিক্সা ও ভ্যানের ভরসাও এই সাকোঁ। তবে পরিস্থিতি পাল্টে যায় বর্ষা মৌসুমে। পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে বাড়তে থাকে এই কোলের পানিও। ফলে একাংশ তলিয়ে গিয়ে পাড়াপাড় বন্ধ হয়ে যায় এই সাকোঁ দিয়ে। তখন এ অঞ্চলের মানুষ স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও হাট-বাজারে যাতায়াত করে খেয়া নৌকা দিয়ে।
স্থানীয় মোহন মিয়া নামে এক বৃদ্ধ বলেন, বছরের পর বছর তারা এভাবে পারাপার হয়ে আসছে। আগে এই সাকোঁও ছিল না। শুকনা মৌসুমে কোলের তলদেশ দিয়ে পায়ে হেটে ও বর্ষা মৌসুমে খেয়া নৌকা দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতো। তিনি বলেন এই ঘাট দিয়ে একটি ব্রিজ হলে এসব অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হতো।
আলামিন হোসেন নামে এক ছাত্র বলেন, সাকোঁর উপর দিয়ে পানি উঠে গিয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে গেছে। তাই আমরা স্কুল কলেজে যেতে পারছি না।
ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লতিফ মোল্লা বলেন, এই ২৫টি গ্রামের মানুষের চলাচল এই সাকোঁ দিয়ে। নদীর পানির বৃদ্ধির ফলে এই কোলেও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে সাকোঁটির কিছু অংশ। ফলে এই সাকোঁ দিয়ে মানুষ এখন আর চলাচল করতে পারছে না। বিকল্প হিসেবে খেয়া নৌকায় পাড় হচ্ছে মানুষ। কিন্তু মাত্র একটি খেয়া নৌকা থাকায় সেখানেও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
রতনদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসিনা পারভীন বলেন, ৪বছর আগে উপজেলা পরিষদ এই সাকোঁটি নির্মাণ করে দেয়। পরবর্তীতে আমি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ২লক্ষ টাকা ব্যয়ে সাকোঁটি সংস্কার করে দিয়েছি। শুকনা মৌসুমে এই সাকোঁর উপর দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারলেও এখন পানি উঠে যাওয়ায় তারা আর চলাচল করতে পারছে না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এসব অঞ্চলের মানুষ। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলেই পাল্টে যেত এসব অঞ্চলের চিত্র। লাঘব হতো মানুষের ভোগান্তি। আমি আশা করছি খুব শীঘ্রই এখান দিয়ে ব্রিজ হবে।