॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে “শিক্ষার আলো জ্বালবো, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব” শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে গতকাল ২৯শে জানুয়ারী সকালে বর্নাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক জিনাত আরা’র নেতৃত্বে একটি বর্নাঢ্য র্যালী কালেক্টরেটের আম্রকানন চত্ত্বর থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
র্যালীতে প্রধান অতিথি হিসেবে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন সরকারী বিভাগের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ অংশগ্রহণ করেন।
র্যালী শেষে কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক জিনাত আরা’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আশরাফ হোসেন ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম। উপস্থাপনা করেন আলাদীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গুলশান আরা মোস্তফা।
আলেচনা সভার সম্মানিত বিশেষ অতিথি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের কোমলমতি শিশুদের জীবনে প্রথম শিক্ষার আলো প্রজ্বলিত হয় প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে। সুতরাং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম তৈরীর কারিগর হচ্ছেন আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। সেই জন্য প্রত্যেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উচিত মানসম্মত শিক্ষা ও বিভিন্ন নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তোলা। যাতে তারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি সুখী, সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জিনাত আরা বলেন, বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রতিটি শিশুর জন্য শিক্ষা হচ্ছে তার সংবিধানসম্মত মৌলিক অধিকার। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা হলো তার শিক্ষা জীবনের প্রথম ধাপ। সুতরাং সরকারের পাশাপাশি আমাদের সকলের উচিত আমাদের দেশে জন্মগ্রহণকারী প্রতিটি শিশুকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা। সেই লক্ষ্যে সরকার দেশের প্রায় ২৬হাজার ১৯৩টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারী করণের মাধ্যমে শিক্ষার আলো প্রতিটি শিশুর মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও দেশের শিক্ষার হার শতভাগ করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ, বিভিন্ন শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালুসহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। শিক্ষার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই ভবিষ্যত প্রজন্মকে উন্নত বিশ্বের দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ ও বিভিন্ন নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের গড়ে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
‘সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চাই’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সেই উক্তিটির আলোকে তিনি আরো বলেন, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে শিক্ষাসহ সর্বদিকে বিশ্বমানের সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। আমাদের সকলের উচিত সরকারের পশাপাশি আমাদের শিশুদের একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করে গড়ে তোলা। যাতে তারা তাদের শিক্ষা ও মেধার আলো দিয়ে শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে আলোকিত করতে পারে।
তিনি সকল অভিভাবক ও পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানের যতœ নেওয়াসহ মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ সম্পর্কে সচেতন করার পরামর্শ দেন।
এছাড়াও তিনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলামকে ঢাকা বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নির্বাচিত হওয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানান।