Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাস্তা ভেঙ্গে পাশ্ববর্তী স্কুলের পুকুরে চলে যাওয়ায় বালিয়াকান্দির বারুগ্রাম কমিউনিটি ক্লিনিকে আসা-যাওয়ায় ভোগান্তি

॥রঘুনন্দন সিকদার॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বারুগ্রাম কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রবেশের রাস্তাটি ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী স্কুলের পুকুরে চলে গেছে।
পায়ে হেঁটে যাওয়ার মতো যে রাস্তাটুকু স্থানীয় উদ্যোগে করা হয়েছে সেটুকুও সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। ফলে ওই ক্লিনিকে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সেবা গ্রহীতাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও ক্লিনিকটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, খুব শীঘ্রই সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, বারুগ্রামের দরিদ্র মানুষগুলোর মাতৃ ও শিশু সেবাসহ সব ধরণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০০ সালে ৫ শতাংশ জমির উপর ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ক্লিনিকটির চারপাশে শুধু পানি আর পানি। কমিউনিটি ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য যে রাস্তাটি ছিল ইতিমধ্যে সেটি ভেঙ্গে বারুগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরের মধ্যে চলে গেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে পুকুরের পাশ দিয়ে পায়ে চলার মতো যে একটুখানি সরু রাস্তা তৈরী করা হয়েছিল সেটিও এখন বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত। দীর্ঘদিন পানিতে নিমজ্জিত থাকায় কাদা হয়ে সেখান দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের যে বিল্ডিংটি রয়েছে সেটিও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিল্ডিংটির ভিতরের ছাদে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। দেয়ালের চারপাশ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। কমিউনিটি ক্লিনিকের টিউবওয়েল ও টয়লেটটিও দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে।
ক্লিনিকের কর্তব্যরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার রফিকুল ইসলাম রানা জানান, এখানে পাটুরিয়া, বারুগ্রাম, সাটুরিয়া, চরগুয়াদহ ও বাজার বেতেঙ্গা গ্রাম থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০/৭০ জন রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে। সপ্তাহে দুই দিন স্বাস্থ্য সহকারী ও দুই দিন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মী চিকিৎসাসেবা প্রদান করে থাকেন। কিন্তু ক্লিনিকে ঢোকার কোন রাস্তা না থাকার কারণে এখন রোগীরা এখানে আসতে চায় না। বেশ কিছুদিন আগে আমি নিজ উদ্যোগে একটি সরু রাস্তা তৈরী করি আপাতত চলার জন্য। কিন্তু ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তাটি ডুবে গেছে। ফলে এখন ক্লিনিকে আসা-যাওয়া করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া একটু বৃষ্টি হলেই ক্লিনিকের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। এখানকার টয়লেট ও টিউবওয়েলটিও নষ্ট হয়ে রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে এসব সমস্যাগুলোর সমাধান করা না গেলে ভোগান্তি কমবে না। সাধারণ মানুষ এসে চিকিৎসা নিতে নিরুৎসাহিত হবে।
চিকিৎসা নিতে আসা সাটুরিয়া গ্রামের বিলাসী দাস ও মোহাম্মাদ শেখ জানান, আমাদের একমাত্র চিকিৎসাসেবা নেওয়ায় কেন্দ্র হলো এই ক্লিনিকটি। কিন্তু ক্লিনিকে যাওয়ার কোন রাস্তা না থাকায় আমরা ভীষণ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। যত দ্রুত সম্ভব একটি রাস্তা তৈরী করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাচ্ছি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এস.এম আব্দুল্লাহ-আল-মুরাদ বলেন, বিষয়টি আমি জানি। এরই মধ্যে ক্লিনিক ভবনটি সংস্কার করার জন্য টেন্ডার হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে। আর রাস্তাটির ব্যাপারে আমি বহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যত দ্রুত সম্ভব রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু করবেন।
বহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাস্তাটির বিষয়ে আমাকে জানিয়েছেন। আবহাওয়ার কারণে আপাতত কাজ শুরু করতে পারছি না। আবহাওয়া ভালো হলেই জরুরী ভিত্তিতে ক্লিনিকে যাওয়ার রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।