Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

কৃষিতে ভূমিকা রাখছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন

॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার ২১হাজার ৪১২ হেক্টর আবাদী/ফসলী জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষি ব্যবস্থা ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রকিব উদ্দিন।
তার নির্দেশনা ও পরামর্শে চাষাবাদ করে আগের তুলনায় কৃষকেরা এখন অধিক লাভবান ও স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সুদিন ফিরে পাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক-কৃষানীরা। চাষীদের পরিবারে ফিরে এসেছে সচ্ছলতা।
বিসিএস ২৫তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ২০১২ সালের ৫ই নভেম্বর। যোগদানের পর থেকেই তিনি সদরের প্রতিটি গ্রামের আবাদী জমি ও কৃষক-কৃষাণীদেরকে নিয়ে দল গঠন করে তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অপ্রচলিত বা নতুন ফলবাগান সৃজন করে কৃষিকে করেছেন আরও বেগবান। ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষকদেরকে করেছেন দলবদ্ধ ও সচেতন। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি বাবহারে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করে বিভিন্ন ধরণের সবজিসহ মাঠ ফসল আবাদে রাখছেন নেতৃস্থানীয় ভূমিকা। উৎপাদিত ফসল রক্ষায় ইঁদুর নিধন অভিযানে জাতীয় পর্যায়ে ২০১৪ সালে ২য় স্থান, ২০১৫ সালে বরিশাল অঞ্চলে ২য় স্থান ও ২০১৬ সালে ফরিদপুর অঞ্চলে ৩য় স্থান অর্জন করেছেন এই কর্মকর্তা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইঁদুরের অপকারিতা সম্পর্কে সভা সমাবেশ ও ইঁদুর নিধনে বিভিন্ন কলা-কৌশলে প্রশিক্ষণ প্রদানে ২০১৫ সালে জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে ১ম স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে সদরের ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়। কৃষির আধুনিকায়ন এবং শ্রমিক স্বল্পতা হ্রাসে কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক অবস্থানে থেকে তিনি জমিতে গুটি ইউরিয়া ও জৈব সার (স্তুপ কম্পোস্ট, গর্ত কম্পোস্ট, কুইক কম্পোস্ট, ধৈঞ্চা চাষ), জৈব বালাইনাশক ব্যবহারে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধকরণে রেখেছেন অপরিসীম ভূমিকা। ‘ভালো বীজে ভালো ফসল’- এই বিশ্বাসকে ধারণ করে জমি ভালোভাবে প্রস্তুতকরণের পরে জমিতে শোধনকৃত বীজ বপনে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন তিনি। ধানের ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আবাদকৃত ধানের জমিতে শতভাগ পার্চিং, লগো লাইনে রোপনে কৃষকদেরকে তিনি পরামর্শ প্রদান করছেন। তার দিক নির্দেশনায় বেগুন ও কুমড়া জাতীয় সবজি উৎপাদনে সেক্স ফেরোমন ব্যবহারে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে সবজি চাষীরা। সদরে শস্যের বহুমূখিকরণে মাশরুম, মুগ, ফুল, পেঁয়াজ, গ্রীষ্মকালীন সীম, গ্রীষ্মকালীন টমেটো, বারি সরিষা, বারি গম, ফলের ব্যাপকতা বৃদ্ধিতে মাল্টা, লিচু, আম, সফেদা,পেয়ারা, ড্রাগন ফলের বাগান তৈরীতে তিনি দিন-রাত পরিশ্রম করে চলছেন। বীজ শোধন প্রযুক্তিসহ মৌসুম ভিত্তিক বিভিন্ন প্রযুক্তি কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরকে সম্পৃক্ত করণের মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণে অসামান্য অবদান রেখেছেন এই কর্মকর্তা।
তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় চলতি বছরের জেলা প্রশাসন আয়োজিত উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করে সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ জেলায় ২য় স্থান অধিকার অর্জন করেছে। কৃষকদের আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব দূষণমুক্ত ফসল উৎপাদন, মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে কৃষদের দ্বা প্রান্তে সেবা পৌঁছে দেওয়ায় তিনি কৃষক-কৃষাণীদের কাছে একজন আপন মানুষ হিসেবে স্থান পেয়েছেন।