॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার পশ্চিম মূলঘর গ্রামে গত ২রা আগস্ট রাতের যেকোন সময় শাহিদা বেগম(৫০) ও লামিয়া আক্তার(৭) নামের দুই দাদী-নাতনীকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল ৩রা আগস্ট দুপুরে রাজবাড়ী থানার পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
জানাগেছে, শাহিদা বেগমের স্বামী শাজাহান মিয়া এবং ছেলে শহিদুল মিয়া(লামিয়ার বাবা) ঢাকায় থাকে। তাদের মধ্যে শাজাহান রড মিস্ত্রীর কাজ করে এবং শহিদুল রিক্সা চালায়। দাদী শাহেদা ও নাতনী লামিয়া গ্রামের বাড়ীতে বসবাস করতো। লামিয়াকে বারবাকপুর ব্র্যাক স্কুলে শিশু শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়েছিল।
গতকাল ৩ঠা আগস্ট বেলা ১২টার দিকে পাশের বাড়ী শফিকুল মিয়ার মেয়ে নুপুর(৭) ও সাদিয়া(৫) লামিয়াকে পেয়ারা দেয়ার জন্য তাদের ঘরে ঢুকে রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করে উঠলে ঘটনা জানাজানি হয়। খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে রাজবাড়ী থানার ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। নিহত শাহিদা বেগমের স্বামী, ২ মেয়ে ও শাহিদুল নামে এক ছেলে রয়েছে।
নিহতের পরিবারের একটি সুত্র জানায়, নিহত শাহিদার বেগম দেড় বছর পূর্বে সংসারে অভাবের কারণে রাজবাড়ী জুটমিলে কাজ করতো। এরপর পরিবারের সম্মানের দিকে তাকিয়ে মিলে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। জুটমিলের একজন তাকে মোবাইলে দিনে এবং রাতে ফোনে বিরক্ত করতো। জীবিত অবস্থায় শাহিদা তার সন্তানকে এমন ঘটনা জানায়।
নিহত শাহেদা বেগমের মেয়ে সুমি খাতুন জানায়, তার মাকে স্থানীয় কতিপয় যুবক রাতে মোবাইলে উত্যক্ত করতো এবং কু-প্রস্তাব দিত। এছাড়া বাড়ীর পাশের এক যুবক কারণে-অকারণে বাড়ীর সামনে দিয়ে ঘুরাফিরা করতো।
দাদী এবং নাতনীর জবাই করে হত্যার খবর জানতে পেরে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী,এমপি, পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি,বিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল করিম, রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তারিক কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি সাংবাদিকদের বলেন, নিহতদের লাশের ময়না তদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নৃশংস এই হত্যার পিছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। যেগুলো তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে বলা সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন ঘটনা তদন্ত করে আসামীদের গ্রেফতার করা হবে। এই ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয় হবে না।
রাজবাড়ী থানার ওসি মোঃ তারিক কামাল জানান, এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।