Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

ঈদে দৌলতদিয়া ঘাটে কোন বিড়ম্বনা ছাড়াই মানুষ ও পশুবাহী গাড়ি নিরাপদে যেতে পারবে ——- রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন/দেবাশীষ বিশ্বাস॥ আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের আয়োজনে গতকাল ১লা আগস্ট বেলা ১১টায় বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বিপিএম-সেবা’র সভাপতিত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মোঃ নিজাম, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল ইসলাম, সোনালী ব্যাংকের রাজবাড়ী আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজিএম নূর মোহাম্মদ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আশিকুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিউল আওয়াল, বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ আবু আব্দুল্লাহ, রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মোঃ জাকির হোসেন, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হাসান, ফরিদপুর বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আলম ভুঁইয়া, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মির্জা আবুল কালাম আজাদ, গোয়ালন্দ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মন্ডল, রাজবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছমির উদ্দিন ও জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল করিম, র‌্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রইছ উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(সদর) মোঃ আছাদুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(পাংশা সার্কেল) মোঃ ফজলুল করিম, বিআইডিব্লিটিএ’র উপ-পরিচালক মোঃ সেলিম রেজা, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক মোবারক হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আরিফুর রহমান অঙ্কুর, রাজবাড়ী থানার ওসি মোঃ তারিক কামাল, বালিয়াকান্দি থানার ওসি হাসিনা বেগম, পাংশা ওসি মোঃ আহসান উল্লাহ, কালুখালী থানার ওসি মোঃ আমিনুল ইসলাম, ডিআইও-১ মোঃ জহিরুল ইসলাম, জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, ঘাট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ, রাজবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার পরিবহন মালিক গ্রুপ, দৌলতদিয়া লঞ্চ মালিক সমিতি, মাহেন্দ্র-থ্রি হুইলার মালিক সমিটি ও জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি,বিপিএম-সেবা বলেন, গত ঈদুল ফিতরে ঘাট ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় কোন ধরণের ভোগান্তি ও যানজট ছাড়া যেভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার যাত্রীরা নির্বিঘেœ পারাপার হয়েছে আসন্ন ঈদুল আযহায়ও আমরা সকলে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একইভাবে নির্বিঘেœ পারাপার করতে সক্ষম হবো।
তিনি আরো বলেন, ঈদুল ফিতরের সময় রাজবাড়ী বাজারের মধ্যে যানবাহন ঢুকতে না দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা নির্বিঘেœ বেচাকেনা করতে পেরেছে এবং পুলিশের সতর্ক দৃষ্টি থাকার জন্য বাজারে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা বা চুরি হয়নি। আসন্ন ঈদুল আযহায়ও পূর্বের ন্যায় পুলিশী তৎপর থাকবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেক ব্যবসায়ী সারা দিনের বেচাকেনার পর সমুদয় টাকা দোকানের ক্যাশে বা সিন্দুকে রেখে চলে যায়। এ বিষয়ে দোকানের কর্মচারীরা অবগত থাকে এবং তাদের সহযোগিতায় চুরির সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু রাতে ব্যাংক খোলা থাকে না, সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ীগণ ইচ্ছা করলে জিডির মাধ্যমে রাতে তাদের টাকা সংশ্লিষ্ট থানার ভল্টে জমা রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা থানার ওসিকে অবহিত করলে ওসি টাকা আনা নেয়ার ক্ষেত্রে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। যাতে করে ব্যবসায়ীরা বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। ঈদুল আযহায় যেহেতু মানুষ পশুর হাট থেকে কোরবানীর পশু ক্রয় করার কারণে পশুর হাটেই বেশী বড় অংকের টাকা লেনদেন হয়। এ সময় জাল টাকা ব্যবহারের ঝুঁকি থেকে যায় সেই জন্য প্রতিটি পশুর হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণের মেশিন ও ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ ১টি করে বুথ থাকবে। যেখান থেকে পশু বিক্রেতারা টাকা জাল কিনা তা যাচাই করে নিতে পারবেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যেন কোন বিড়ম্বনা ছাড়াই বাড়ী যেতে পারে সে ব্যাপারে জেলা পুলিশসহ দায়িত্বে নিয়োজিত সকল বিভাগ পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে অত্যন্ত তৎপর থাকবে। গত ঈদে ডিজেল চালিত অটোরিক্সার(মাহেন্দ্র) অব্যবস্থাপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেক্ষেত্রে এবার ১নং ফেরী ঘাট থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী ১০টি ছাড়ার পর সমসংখ্যক মাহেন্দ্রকে ঘাটে ঢুকতে দেয়া হবে। কোন অবস্থাতেই লাইসেন্স ছাড়া কোন যানবাহনের চালক গাড়ী চালাতে পারবে না। প্রয়োজনে তাদেরকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দেন। বাস মালিকগণ গতবার ভাড়া আদায়ের যে তালিকা প্রশাসনের নিকট জমা দিয়েছিল তার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছিল। যা কোন অবস্থাতেই কাম্য ছিল না। বাইরের জেলার অনেক লক্ষর-ঝক্কর গাড়ী ঘাট এলাকায় দেখা গিয়েছিল। যাদের দ্বারা যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়। এবার কতগুলো বাস ঘাট এলাকায় চলাচল করবে তার তালিকা জেলা পরিবহন মালিক গ্রুপকে আগেই ট্রাফিক বিভাগকে জানাতে হবে। যাতে সেই অনুযায়ী ট্রাফিক বিভাগ ব্যবস্থা নিতে পারে।
পুলিশ সুপার বলেন, গরুর ট্রাকের ক্ষেত্রে ফেরী পারাপারের জন্য নির্দিষ্ট ঘাট ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকবে। এবার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২১টি লঞ্চ ও ২০টি ফেরী দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হবে। এছাড়াও সভায় ঘাট এলাকায় বিকল্প আলোর ব্যবস্থা, টিকেট জালিয়াতি/অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, দালালদের দৌরাত্ম্য ও ছিনতাই প্রতিরোধ, ঘাট এলাকার রাস্তা ও ড্রেনেজ সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।