Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলায় লক্ষ্যমাত্রার বেশী জমিতে আবাদ করা হলেও চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের ফলন কম হওয়ার আশংকা চাষীদের

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হলেও ফলন পাওয়ার আশংকা করছে চাষীরা। দাম পাওয়া নিয়েও তাদের রয়েছে সংশয়। বীজ ও চারা সংকটে বপন পিছিয়ে যাওয়ায় চলতি রবি মৌসুমে পেঁয়াজের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ২৬হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২৮হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলায় সবচেয়ে বেশী ১০ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে এবং কালুখালীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩৫০ হাজার টন। তবে কৃষি বিভাগের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয় বলে জানায় পেঁয়াজ চাষীরা।
বালিয়াকান্দি উপজেলার কৃষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর বর্ষার পানি দেরীতে নামার কারণে অপেক্ষাকৃত দেরীতে পেঁয়াজের আবাদ করাসহ ঘন কুয়াশার কারণে ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আমাদের এখানে ১০ থেকে ১২ মণ করে পেঁয়াজের ফলন হয়েছে।
কৃষক প্রাণেশ বিশ্বাস জানায়, অপেক্ষাকৃত দেরীতে পেঁয়াজ চাষ, পেঁয়াজের বীজের চড়া দাম এবং বাজারের নি¤œমানের ওষুধের কারণে উৎপাদন কম হয়েছে।
কালুখালী অঞ্চলের কৃষক মোঃ আইযুব মোল্যা বলেন, এ বছর পেঁয়াজের গাছ ভাল দেখা গেলেও শেষ মুহূর্তে কুয়াশায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। প্রতি বছর পৌষ মাসের মধ্যে পেঁয়াজের আবাদ শেষ হতো। এবার বর্ষার পানি না নামার কারণে মাঘের অর্ধেক পর্যন্ত পেঁয়াজের চাষ হয়েছে, যে কারণে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে।
পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ নিয়ে চাষীরা জানায়, রাজবাড়ীতে ১একর জমিতে চাষ থেকে শুরু করে বীজ, সার, সেচ, ওষুধ, পরিচর্যা থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ হয় গড়ে প্রায় ১৬ হাজার টাকা। এ বছর প্রতি একরে গড়ে উৎপাদন হয়েছে ১২ থেকে ১৬ মণ। বর্তমান বাজার মূল্যে ১৬ মণ পেয়াজের দাম ১৩ হাজার টাকা। যে কারণে ক্ষতির মধ্যে রয়েছে কৃষকরা। কৃষি বিভাগের তথ্য সম্পর্কে কৃষকরা জানায়, এ বছর গড়ে সর্বোচ্চ ১৬ মণ উৎপাদন ধরে মোট উৎপাদন ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭২ টন, যেখানে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ২৭৭ টন পেঁয়াজের উৎপাদন কম হবে।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান জানায়, রাজবাড়ীতে পেঁয়াজের আবাদের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটা অতিক্রম করেছে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩৫০ টন। বালিয়াকান্দিসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার পানি দেরীতে সরার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। তবে পেঁয়াজ ঘরে না আসা পর্যন্ত সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়।