॥রাব্বী মন্ডল॥ জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ২৫শে মার্চ সন্ধ্যায় লোকশেড বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী (কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী,এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি,বিপিএম-সেবা ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক ড. একেএম আজাদুর রহমান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহরাব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শেরে বাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা চায়না রাণী সাহা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালির মুক্তি আন্দোলন স্তদ্ধ করতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ঢাকাসহ সারাদেশে চালানো হয় গণহত্যা। শহীদ হন ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ ও ইপিআরসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার অংসখ্য মানুষ। ২৫শে মার্চের গণহত্যা শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়।
তিনি আরো বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে এই লোকশেড এলাকাকে অবাঙ্গালী বিহারীরা গণহত্যার স্থান হিসেবে ব্যবহার করেছিল। বিহারীরা মনে করেছিল বাংলাদেশ কোনদিন স্বাধীন হবে না, এজন্য তারা নির্বিচারে গণহত্যায় মেতে উঠেছিল। রাজবাড়ীতে তারা এতই শক্তিশালী ছিল যে, ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও ১৮ই ডিসেম্বর পর্যন্ত লেগেছিল লোকশেড এলাকা মুক্ত করতে। তিনি ২৫শে মার্চের কালরাতে নিহতগণসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। এছাড়াও তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্মিলিতভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ ছাদেকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইদুজ্জামান খান ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার পূর্বে বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে মোমবাতি প্রজ্জ্বালন ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এছাড়াও আলোচনা সভার শুরুতে শহীদদের স্মরণে ১মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভার শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।