Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

আলাদিপুরে নওয়াব গ্রামার স্কুলে বৃত্তি প্রদান ও পুরস্কার বিতরণ

॥রফিকুল ইসলাম॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর বাজার সংলগ্ন নওয়াব গ্রামার স্কুলের প্রধান শাখায় ‘সাহানা নওয়াব বৃত্তি প্রদান’ ও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান গতকাল ৯ই মার্চ সকালে স্কুল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম নওয়াব আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী(কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী,এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেবেকা সুলতানা সাজু, সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও জেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সাহানা বেগম এবং সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নৃপেন্দ্রনাথ সরকার।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন স্কুলের উপাধ্যক্ষ (শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনা) শাফি ফেরদৌস শুভ এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আলীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম জাহিদুল হাসান বক্কার।
এ সময় রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা চৌধুরী রন্টু, আলাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার, নওয়াব গ্রামার স্কুলের প্রধান ব্যবস্থাপক মোঃ সলেমান খলিফা, উপাধ্যক্ষ(প্রশাসন) মোঃ হারিসুল ইসলাম স্বপন, প্রধান শাখার শিক্ষক ইনচার্জ জাকির হোসাইন, সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা কাকলী, সায়মা সুলতানা হাসি, প্রধান শাখার কোষাধ্যক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌস আশা, সহকারী শিক্ষিকা নাজমা আক্তারী, প্রভাতী শর্মা, আনিছা আক্তার, সহকারী শিক্ষক ইলিয়াস হাসান, আব্দুস সাত্তার, কল্যাণপুর শাখার কোষাধ্যক্ষ পলাশ কুমার শর্মা, রিসোর্স টিচার খালেদা আক্তার ও সহকারী শিক্ষিকা সালমা আক্তারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, সরকারী স্কুলের পাশাপাশি কিন্ডার গার্টেনগুলোতেও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো লেখাপড়া করতে হবে। ইংরেজীতে পারদর্শী হতে হবে। শিক্ষকদের পাঠদানে মনোযোগী হতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে বেকারত্ব কমবে। লেখাপড়ায় মেয়েরা এখন আর পিছিয়ে নেই, বরং তারাই ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। যে জাতি যত শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত। এ জন্য ভালোভাবে লেখাপড়া করার কোন বিকল্প নাই। দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হলে এই এলাকার আরো উন্নয়ন হবে। তিনি নওয়াব গ্রামার স্কুলের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ^াস দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, এখন কম্পিটিশনের যুগ। এ জন্য মানসম্মত শিক্ষা অর্জন করতে হবে। এ বছর মেধা তালিকা অনুযায়ী জেলা স্কুল ও গার্লস স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। তদবীরের মাধ্যমে কাউকে ভর্তি করা হয় নাই। জেলা ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার বলেন, বাচ্চাদের সামনে বড়রা কখনো ঝগড়া-বিবাদ করবেন না। আপনারা যা করবেন বাচ্চারা সেটাই শিখবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও শান্তিতে থাকতে চাইলে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকেই আবার ক্ষমতায় আনতে হবে।
শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী রেবেকা সুলতানা সাজু বলেন, মানুষকে সেবা করাই মানুষের ধর্ম। ভালো মানুষের সবকিছু ভালো হয়, আল্লাহ তাকে অবশ্যই ভালো রাখে। নৌকায় ভোট না দিলে দেশের উন্নয়ন হবে না। নৌকায় ভোট দিলে সব কিছু পাবেন। রাজবাড়ীতে ২য় পদ্মা সেতু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত ভালো মানুষ আর নাই। তার জন্য দোয়া করবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম নওয়াব আলী বলেন, ১২বছর আগে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। সবার সহযোগিতায় আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। আমি এবং আমার সহধর্মিনী মিলে নিজেদের টাকা দিয়ে বৃত্তি প্রদান করা শুরু করলাম। স্কুলকে নিয়মিত টাকা দেই। উদ্দেশ্য ভালো মানুষ গড়া। আমার অনুপ্রেরণা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। এই স্কুলে লেখাপড়া করলে কোন কোচিং করতে হয় না। অনেকগুলো শাখা আছে। আমি এই জায়গাতেই একটি উচ্চ বিদ্যালয় করবো। আমার চাওয়া-পাওয়ার আর কিছু নাই। যা চাওয়া-পাওয়ার ছিল তার সবই আমি পেয়েছি। ছাত্রজীবনেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। ভারতে ট্রেনিং নিয়েছিলাম। এই স্কুলের জন্য যা কিছু করার আমি করবো। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন মানুষের সেবা করে যাব।