॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচরে আবাদী জমিতে দীর্ঘদিন ধরে গভীর গর্ত করে মাটি উত্তোলন করায় পাশের দুটি দরিদ্র পরিবারের বসতভিটা, একটি বড় পুকুর পার ও একজনের আবাদী কৃষি জমি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে গত ১১ই ফেব্রুয়ারী গোয়ালন্দ ঘাট থানায় পুকুর মালিক লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানাগেছে, উজানচর রিয়াজ উদ্দিন পাড়ার বারেক শেখ(৫০) প্রায় দুই মাস আগে তার প্রায় এক বিঘা কৃষি জমিতে স্যালো ইঞ্জিনের দুটি ড্রেজার(মাটি খনেনর যন্ত্র) বসায়। সেখান থেকে গর্ত করে মাটি উত্তোলন করে এলাকায় বিক্রি করছেন। গভীর গর্ত হওয়ায় প্রতিবেশী ইমান আলী খার প্রায় সাড়ে দশ বিঘা জমির পুকুর পাড় ধসতে শুরু করেছে। এছাড়া ওমেদ আলীর কৃষি জমির কিছু অংশ, প্রতিবেশী ইমান আলীর পুকুর পাড়ের কিছু অংশ ধসে পড়ে। সাথে প্রতিবেশী জয়নদ্দিন শেখ ও নুর ইসলাম খার বসতভিটার মাটিও ধসতে শুরু করেছে।
পুকুরের মালিক ইমান আলী খান জানান, বারেককে বার বার নিষেধ করলেও সে উল্টো হুমকি দিয়ে বলে, মাটি আমি কাটব, পারলে কেউ ঠেকাক। মাটি কাটা অব্যাহত রাখায় তার গভীর গর্তের পুকুরের মাটি ও পানি তার গর্তে গিয়ে পড়ছে। এতে আমার অন্তত ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বসত বাড়ির মালিক নুর ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাটি উত্তোলনের লোকজন প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই আমার ঘরে জুয়া খেলা, গাঁজা সেবন করে রাত্রি যাপন করে। বসত ভিটার অংশ তাদের বলে দাবী করে জোরপূর্বক ভিটের বেশ কিছু গাছ ও বাঁশ কেটে ফেলতে বাধ্য করেছে। যেকোন মুহুর্তে বসতভিটাসহ বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে গর্তে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। আমার কেউ নেই বলে ভয়ে তাদের কিছু বলতে পারিনা।
প্রতিবেশী কৃষি জমির মালিক ওমেদ আলী সরদার বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে গভীর গর্ত করে তারা মাটি কেটে ব্যবসা করছে। বাঁধা দিলে স্থানীয়ভাবে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। এ সময় কয়েকদিন বন্ধ রাখলেও ফের মাটি কাটার ব্যবসা করছে।
অভিযুক্ত বারেক জানান, গোয়ালন্দ মোড়ের রমজান নামের একজনের ড্রেজার ভাড়া করে মাটির ব্যবসা করছিলাম। কিন্তু এভাবে পুকুর পাড় ক্ষতিগ্রস্থ হবে ভাবেনি। তাই প্রশাসনের নির্দেশে আজ সোমবার ড্রেজারের যন্ত্রপাতি ও পাইপ খুলে নিচ্ছি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার এস.আই সোমনাথ বসু জানান, অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নিতে এলাকায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। সে পলাতক থাকায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে পাইনি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উজানচরে ড্রেজার দিয়ে গভীর গর্ত করে মাটি উত্তোলন করায় ঝুঁকিতে বসতভিটা
