ভৌগোলিক দিক দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দরবনঘেঁষা সীমান্তগুলো মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিল গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। যুদ্ধে দক্ষিণাঞ্চলকে শক্তিশালী করতে মুক্তিবাহিনীর প্রয়োজন ছিল সুন্দরবনের মধ্যে বিছিয়ে থাকা নৌপথগুলো ব্যবহার করা। পাকিস্তানিরাও নৌপথ ব্যবহার করে শক্তিশালী অবস্থান পাকাপোক্ত করতে ছিল মরিয়া। বনের ভেতর দিয়ে ভারত থেকে আসা অস্ত্রবাহী প্রধান লঞ্চ দু’টি বিধ্বস্ত করতে পারলেও পরে মুক্তিবাহিনীর নৌ-কমান্ডো, গেরিলা বাহিনী, ইপিআর ও ভারতীয় ডিফেন্স সদস্যদের ঐকান্তিক চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত তীরে ভিড়তে পারেনি পাকিস্তানিদের কোনো গানবোট।
শ্যামনগরের সুন্দরবন এলাকা ছিল ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে। মেজর এমএ জলিল ছিলেন সেক্টর কমান্ডার (এপ্রিল-ডিসেম্বরের প্রথমার্ধ)। পরে কিছুদিনের জন্য দায়িত্ব পালন করেন মেজর জয়নুল আবেদীন। কালিন্দী নদীর পাড়ে ভারতের শমসেরনগরে ছিল সাব-সেক্টর ক্যাম্প। এপারে নদী ঘেঁষে কৈখালী বিওপিতে ছিল মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প। ক্যাম্প ইনচার্জ ছিলেন সুবেদার সেলিম, বাশার ও ক্যাপ্টেন মাহফুজ আলম বেগ। তাদের নেতৃত্বেই মূলত শ্যামনগর, গাবুরা, হরিনগর, কৈখালী, ভেটখালি প্রভৃতি এলাকায় যুদ্ধ হয়।