Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষে বাজবাড়ীতে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত॥সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে কঠোর ব্যবস্থা — জেলা প্রশাসক

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ ‘পরিকল্পিত পরিবার গড়ি, মাতৃমৃত্যু রোধ করি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আয়োজনে গতকাল ২৭শে ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা এ্যাডভোকেসি সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজমের সঞ্চালনায় সভায় ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এস.এম.এ হান্নান, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ডাঃ গোপাল চন্দ্র সূত্রধর, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মাতৃকণ্ঠের সম্পাদক খোন্দকার আব্দুল মতিন, বানিবহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম মোস্তফা বাচ্চু, রামকান্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হাশেম বিশ্বাস, আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত হাসান, খানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহার হোসেন তকদির, দৈনিক আমাদের সময়ের প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম ও দৈনিক ডেসটিনির জেলা প্রতিনিধি খন্দকার রবিউল ইসলাম মজনু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের প্রতিপাদ্য তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজম।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ, সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। বিভিন্ন সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির কিছু। যদিও সরকারের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে এই জনসংখ্যা বৃদ্ধি কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, তারপরও এই বৃদ্ধির হার যাতে আরো কমিয়ে আনা যায় সে লক্ষ্য নিয়ে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে। জন্যসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দেশে কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাওয়াসহ খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থান সব কিছুর উপরই বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এই জনগোষ্ঠীকে যদি চীনসহ পাশ্চাত্য দেশগুলোর মতো বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়ে তবে আমাদের অর্থনীতির সার্বিক উন্নয়নসহ অর্থনীতির উপর এই বিপুল জনগোষ্ঠিীর প্রভাব অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বর্তমান সরকার সেই লক্ষ্য নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমাদের সবকিছু বিবেচনা করে জন্ম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করতে হবে।
তিনি উপস্থিত সকলকে বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি ও সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে জনসংখ্যা রোধকল্পে তাদের লেখনী ও প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণকে আরো বেশী সচেতন করে তোলার আহ্বান জানান।
এছাড়াও সভায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীদের ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করার বিষয়ে বিভিন্ন বক্তার বক্তব্যে প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, জেলার সকল সরকারী বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন কিনা তা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের। সরকারের প্রদত্ত সেই দায়িত্বের জায়গা থেকে কোন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি জেলার সাধারণ জনগণের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সাঠিকভাবে পালন না করাসহ জনসাধারণকে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায় তবে সেই সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানাতে বাধ্য হবো। প্রয়োজনে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এছাড়াও তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন জানিয়ে বলেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের যে সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে না বলে অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে জেলার অন্য কর্মস্থলে বদলী করার জন্য জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে নির্দেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ী জেলায় আগামী ৩০শে ডিসেম্বর থেকে ৪ঠা জানুয়ারী পর্যন্ত পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ পালন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।