Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৪ই ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানের বিজয় দিবসের মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক ড. এ.কে.এম আজাদুর রহমান। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদেকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নুরমহল আশরাফী, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান ও সদর থানার ওসি মোঃ তারিক কামালসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, স্বাধীনতার স্বপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ দর্শকগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার প্রধান অতিথি রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সম্মানিত বিশেষ অতিথি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীসহ অন্যান্য বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা করতে গেলে আমাদের এর আগে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭ই মার্চের ভাষণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবী দিবস একটি অপরটির সাথে জড়িত। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর চক্র আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল এদেশকে মেধাশূন্য করতে। শুধু সেখানেই তারা থেমে থাকেনি। আমাদের বিজয় অর্জনের পর তারা তাদের এদেশীয় যড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছিল। মূলত আমাদের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চের পরিবর্তে ৭ই মার্চ হওয়া উচিত ছিল। এর কারণ ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মাধ্যমে ঐদিনই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। আজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে হলেও বঙ্গবন্ধু ও তার খুনীদের বিচারসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর যে সমস্ত দোসর জামাত-শিবিরের নেতা রাজাকার আল-বদররা যুদ্ধাপরাধ ও বৃদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল তাদের বিচার সম্পন্ন হয়ে তাদের অনেকের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। যাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্য, স্বাধীনতা যুদ্ধে গণহত্যার শিকার শহীদগণ, বুদ্ধিজীবীসহ সকলের আত্মা শান্তি পেয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই বিচার সম্পন্ন করছেন। এছাড়াও বক্তাগণ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রস্তুতসহ বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের যে উন্নয়ন করেছেন তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। আলোচনা সভার পর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পন ঃ এরআগে হত্যাযজ্ঞের শিকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সকাল ১০টায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত লোকোসেড বদ্ধভূমিতে উপস্থিত হন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন্নাহার চৌধুরী লাভলী, জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরীসহ কর্মকর্তাগণ, আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। এরপর তারা বদ্ধভূমির বেদীতে পুষ্পমাল্য দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পন করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।