॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী সিভিল সার্জন অফিসের আয়োজনে গতকাল ১লা ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বর্নাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বক্তব্য রাখেন।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্সের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজম এবং জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ এস.এম.এ হান্নান।
পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ সুশীল কুমার রায়। সঞ্চালনা করেন সিভিল সার্জন অফিসের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোকরেমা মাঞ্জুরা। এ সময় স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এবং এনজিও প্রতিনিধিগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী শুরুতেই বিজয়ের মাসে আমাদের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সকলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, এইচআইভি/এইডস একটি মরণ ব্যাধি। যা আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশেই ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়লেও আমাদের দেশে এই রোগটি আমাদের সামাজিক পরিবেশ ও ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতার কারণে তেমন ভয়াবহ আকারে ছড়াতে পরেনি। এমন এক সময় ছিল যখন আমাদের দেশের মানুষের চিকিৎসার জন্য একই সিরিঞ্জ দিয়ে অনেকের ইনজেকশন দেওয়া হতো। তখন এই রোগটি আবিষ্কার না হওয়ার কারণে মানুষ হয়তো বুঝতে পারতো না। কিন্ত বর্তমানে এই রোগটি সম্পর্কে জানার কারণে এখন আমরা ওয়ান টাইম সিরিঞ্জ ব্যবহার করি। আমরা আরো সচেতন হলে এই মরণ ব্যাধি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারব। দেশের অন্য জেলার তুলনায় রাজবাড়ী জেলার পতিতাপল্লীতে যারা বসবাস করে তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রতিনিয়ত দেহ সম্পর্কিত ব্যবসার কারণে বার বার এইচআইভি/এইডস পরীক্ষা করা হলেও ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ওখানে যারা থাকে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে আমরা ওই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে উঠিয়েও দিতে পারি না। তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িয়ে না পড়ে সেই লক্ষ্যে পতিতাপল্লীর ৮শত শিশুর জন্য রাজবাড়ীতে একটি সেফ হোম নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের মধ্যে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। যা কিছুই করা হোক না কেন আমরা সকলে যদি সচেতন হই তাহলে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের দ্বারা এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারি।
আলোচনা সভার পূর্বে সিভিল সার্জন অফিস থেকে একটি বর্নাঢ্য র্যালী বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এনজিও ব্র্যাক, ভিপিকেএ, রাস, ধরণী, মেরী স্টোপস ও সূর্যের হাসি ক্লিনিক এই আয়োজনে সিভিল সার্জন অফিসকে সহযোগিতা করে।