॥চঞ্চল সরদার॥ শীতের শুরুতেই রাজবাড়ীতে ব্যস্ত সময় পাড় করলেও মজুরী বাড়েনি লেপ-তোষক কারিগরদের। ফলে সারা বছরই অভাব অনটনের মধ্যে দিন কাটাতে হয় তাদের। এমনটাই আক্ষেপ করেছেন লেপ-তোষকের কারিগররা।
রাজবাড়ী গুড় বাজারে তুলা পট্টির লেপ-তোষকের কারিগর ওয়াদুদ মন্ডল এ প্রতিবেদককে জানান, বছরের ১২ মাসের মধ্যে আমরা শীতের ৩মাস ভরপুর কাজ করি। বাকী নয় মাস তেমন একটা কাজ থাকে না। বলতে গেলে অনেকটাই বসে থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের মজুরী কম। আমরা সারাদিন ধরে ৩টা লেপ সেলাই করতে পারি। এক একটি লেপের মজুরী ১২৫টাকা। সে হিসেবে দিনে আমাদের আয় ৩৭৫টাকা। এরপর যখন কাজ থাকে না তখন আমরা মহাজনদের কাজ থেকে দাদনের মাধ্যমে টাকা নিয়ে থাকি। যখন কাজ করি তখন টাকা দেওয়া লাগে। দেখা যায় দিন শেষে বাজার করার মত টাকা থাকে না। তিনি লেপ প্রতি ১২৫টাকা থেকে মজুরী বাড়িয়ে ২০০ টাকা করার জন্য মহাজনদের প্রতি দৃষ্টি আর্কষণ করেন।
দোকান মালিকরা জানান, রাজবাড়ীতে শীতের প্রভাব পড়া শুরু হলেও ক্রেতারা সেই ভাবে আসছে না। শীত যত বেশী পড়বে বিক্রি ততো ভালো হবে। তবে এসব তৈরী করতে তুলাসহ যেসব মালামালের প্রয়োজন হয় তার দাম এখন বেশ চড়া। সে কারণে লেপ তোষকের দাম এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশী পড়বে। মাঝারি আকারের একটি লেপ তৈরি করতে চার কেজি তুলার প্রয়োজন।
প্রতি কেজি তুলার দাম ১২০ টাকা। ১০ গজ কাপড়ের দাম ৩৫০ টাকা, সেলাই খরচ লাগে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। আর কারিগরের মজুরী লাগে ২৫০ টাকা। সব মিলিয়ে একটি লেপ তৈরি করতে এক হাজার টাকা খরচ হয়। সেটি বিক্রি হয় এক হাজার তিনশ’ টাকা থেকে এক হাজার পাঁচশ’ টাকা পর্যন্ত। কোয়ালিটি বুঝে এক একটার আলাদা আলাদা দাম।
ইংলিশ মার্কেটের গ্রাউন্ড ফ্লোরের লেপ-তোষকের সেলাই শ্রমিক শফিক খান জানান, প্রতিটি লেপ কিংবা তোষক আমরা চুক্তি ভিত্তিক সেলাইয়ের কাজ করি। প্রতিটি লেপ ১০০-১১০ টাকা, তোষক ১২০-১৫০ টাকা, জাজিম ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা সেলাই বাবদ মজুরী পেয়ে থাকি।
লেপ-তোষক কারিগর মোঃ আবজাল হোসেন বলেন, শীতের সময় লেপ-তোষকের ব্যাপক চাহিদা থাকে। তাই এই সময় সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়। তবে বছরের অধিক সময়ই কাজ থাকে না। তাই আমাদের মজুরী বাড়ানো দরকার।