॥রফিকুল ইসলাম॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বেনীনগর কালিতলা খেয়া ঘাটের চরাঞ্চলে চরমপন্থীদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য আহত ও সরকারী কাজে বাঁধাদান এবং চরমপন্থী সন্ত্রাসী আব্বাস ওরফে খোকন(৪৮) নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর এস.আই মনিরুজ্জামান মোল্লা বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-৬০, ধারাঃ ১৪৩/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩০৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০২/৩৪ পেনাল কোড। মামলায় পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার কামারহাট গ্রামের মৃত নেকোন সরদারের ছেলে(ঘটনার দিন বন্দুকযুদ্ধে নিহত) আব্বাস ওরফে খোকন(৪৮), রাজবাড়ী সদর উপজেলার উড়াকান্দা গ্রামের কুদ্দুস(৪০), পিতা-অজ্ঞাত ও পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার দড়িচর গ্রামের জুলহাস(৪২), পিতা-অজ্ঞাতসহ ১৪/১৫জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলা সুত্রে জানাযায়, গত ২৭শে নভেম্বর গভীর রাতে বেনীনগর কালিতলা খেয়াঘাট চরাঞ্চলে উল্লেখিতরাসহ তাদের সহযোগিরা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অবস্থান ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড করার জন্য শলাপরামর্শ করছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) মোঃ কামাল হোসেন ভূইয়ার নেতৃত্বে থানার এস.আই মামুনুর রশীদ, ডিবি’র এস.আই নিজাম উদ্দিন, এস.আই জাফর আলী খান, এস.আই সোলাইমান কাজী, এস.আই হিরন কুমার বিশ^াসসহ কয়েকজন কনষ্টেবল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঘটনার দিনগত রাত সোয়া ৩টা সেখানে যান। এ সময় টর্চের আলোতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চরমপন্থীরা গুলিবর্ষণ শুরু করে। তখন জানমাল ও সরকারী অস্ত্র গুলি রক্ষার্থে নিজেদের নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে পুলিশ সদস্যরা শটগান দিয়ে ১৩টি, চায়না রাইফেল দিয়ে ৩টি গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে চরমপন্থীরা পিছু হটে ট্রলারযোগে পদ্মা নদী দিয়ে পাবনার দিকে চলে যায়। সন্ত্রাসীদের গুলিতে এস.আই মামুনুর রশীদ ও কনস্টেবল ইমন হোসেন আহত হন। এরপর পুলিশ সন্ত্রাসীদের খুজঁতে খুজঁতে না পেয়ে খেয়া ঘাট সংলগ্ন রহম মেম্বারের পতিত জমিতে সন্ত্রাসী আব্বাসকে রক্তাক্ত ও বুকে গুলিবিদ্ধ আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার হাতের মুষ্টির মধ্য থেকে কার্তুজ ভর্তি একটি ওয়ান শুটার গান, লুঙ্গির কোচ থেকে ২টি কার্তুজ এবং তার আশপাশ থেকে একটি কাটা রাইফেল, দুই রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ৩টি কার্তুজে খোসা ও একটি নকল চুলের টুপি উদ্ধার করা হয়।
এক পর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গুলিবিদ্ধ আব্বাস জানায়, তারা উড়াকান্দার কুদ্দুসের সাথে একত্রে কুষ্টিয়া হতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে উল্লেখিত স্থানে এসে নিষিদ্ধ সংগঠন সর্বহারা দলের সকলে মিলে অবৈধ অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে শলাপরামর্শ করছিল। জুলহাসের নেতৃত্বে উড়াকান্দার কুদ্দুস ও কুষ্টিয়ার ১৪/১৫জন ছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গুলি চালায়। এরপর পুলিশ সদস্যরা আব্বাসকে সরকারী গাড়ীতে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হলে রাত ৪টা ২৫মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এছাড়াও সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত দুই পুলিশ সদস্যকেও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
অপরদিকে, ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় উল্লেখিতদের আসামী করে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন ১৯(এ) ও ১৯(এফ) ধারায় পৃথক আরো একটি মামলা করা হয়। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-৫৯, তাং-২৮/১১/২০১৭। এ খবর লেখা পর্যন্ত এ মামলা দুটিতে আর কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।